ফিটকিরির ৪০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা - ফিটকিরির সংকেত

খালি পেটে আনারস খাওয়ার উপকারিতা জানতে ক্লিক করুনবিভিন্ন রির্সাচ করার মাধ্যমে জানতে পারলাম ফিটকিরির ৪০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। আপনি যদি ফিটকিরি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। কারণ আজকের আর্টিকেলের বিতর ফিটকিরির নানা দিক তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। ফিটকিরি একটি প্রাকৃতিক উপাদান হওয়ায় এর কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।
ফিটকিরি

ফিটকিরি মুখের যত্নের পাশাপাশি আরো নানা কাজে প্রয়োজনে আসে। আবার আদিম যুগের মানুষেরা পানি বিশুদ্ধ করার জন্য ফিটকিরি ব্যবহার করতে পারেন। তাই আপনার বাসার পানি যদি পরিষ্কার না হয় তাহলে ফিটকিরির সাহায্য নিতে পারেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা দেওয়া হয়েছে পুরো আর্টিকেল জুড়ে। 

পেজসূচিপত্রঃ ফিটকিরির ৪০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা

ফিটকিরির ৪০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা

ফিটকিরির ৪০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা, আমরা জানি ফিটকিরিকে ইংরেজিতে বলা হয় alum। এছাড়াও আরো বিভিন্ন নামে অনেকে ঠেকে থাকে। এই ফিটকিরির যেমন বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা রয়েছে তেমনি অপকারিতাও রয়েছে। ফিটকিরি একটি প্রাকৃতিক খনিজ যা বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ও স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য আদিমকাল থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে। বিশেষ করে খাবার পানি বিশুদ্ধ করার

জন্য ফিটকিরির ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বর্তমান যুগে পানি বিশুদ্ধ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি আবিষ্কৃত হওয়ার কারণে ফিটকিরির কথা মানুষ ভুলেই গেছে। কিন্তু আপনি যদি ফিটকিরির ৪০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারেন তাহলে কালকে থেকেই ফিটকিরির ব্যবহার করা শুরু করবেন। তাহলে চলুন আর দেরি না করে ফিটকিরির ৪০টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই।
  • পানিশোধনে ব্যবহৃত হয়ঃ আমরা কম বেশি সবাই জানি ফিটকিরি পানির ময়লা এবং জীবাণু দূর করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
  • রক্ত বন্ধে সহায়কঃ আপনার যেকোন কাটা বা ক্ষতস্থানে ফিটকিরি ব্যবহার করে দেখুন সাথে সাথে রক্ত বন্ধ হয়ে যাবে।
  • গলার খুসখুসে দূর করেঃ ফিটকিরির ৪০ টি উপকারিতা ও অপকারিতার মধ্যে এটি হল অন্যতম। গলার খুসখুশি দূর করার জন্য ফিটকিরির সাথে গরম পানি মিশ্রিত করে দিনে দুইবার মিশ্রিত পানি দিয়ে গড় গড় করুন।
  • মুখের দুর্গন্ধ দূর করেঃ আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে যাদের মুখ দিয়ে দুর্গন্ধ বের হয় তাদের জন্য হতে পারে ফিটকিরি মহা ঔষধ। এর জন্য ফিটকিরির পানি দিয়ে প্রতিদিন কুলি করতে হবে।
  • ত্বকের ফুসকুড়ি দূর করেঃ বিভিন্ন রিসার্চের মাধ্যমে জানা গেছে ফিটকিরিতে রয়েছে অ্যান্টিসেপ্টিক যা ত্বকের ফুসকুড়ি দূর করতে সাহায্য করে।
  • দাঁতের সমস্যা নিরসনঃ আপনি যদি দাঁত মজবুত রাখতে চান তাহলে নিয়মিত ফিটকিরি এবং লবণের মিশ্রণ তৈরি করে নিয়মিত দাঁত মাজতে পারেন এতে করে দাঁতের মাড়ি শক্ত হতে সাহায্য করবে।
  • দ্রুত ঘা সারায়ঃ আপনার শরীরের যেকোন কাটা ফাটা স্থানে ফিটকিরি ব্যবহার করলে খুব দ্রুত ঘা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • বগলের দুর্গন্ধ দূর করেঃ ফিটকিরির প্রাকৃতিক ডিওডোরেন্ট হিসেবে বগলের দুর্গন্ধ দূর করতে বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
  • ফাঙ্গাল সংক্রমণ প্রতিরোধ করেঃ বিশেষজ্ঞদের মতে ফিটকিরি এন্টিফাঙ্গাল হিসেবে কাজ করে। সেই জন্য ত্বকের ফাংগাল সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য ফিটকিরি বেশ কার্যকরী।
  • মুখের ব্রণ কমায়ঃ মুখের ব্রণ দূর করার জন্য ফিটকিরির গুড়া পানিতে মিশিয়ে ব্রনের উপর লাগালে দ্রুত ব্রণ শুকাতে সাহায্য করে।
  • অ্যাথলেট ফুটের চিকিৎসাঃ ফিটকিরির ৪০ টি উপকারিতা ও অপকারিতার আরেকটি হলো, ফিটকিরি ফাংগাল ইনফেকশনের জন্য কার্যকর হওয়ায় অ্যাথলেট ফুট রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে।
  • শেভ করার পর ব্যবহার করা যায়ঃ সেভ করার পর অনেক সময় মুখ জ্বালাপোড়া করে।এই জ্বালাপোড়া তাৎক্ষণিক ভাবে বন্ধ করার জন্য ফিটকিরি ব্যবহার করা হয়।
  • চুল পড়া কমায়ঃ যাদের মাথায় অতিরিক্ত চুল পড়তে দেখা যায় তারা চাইলে ফিটকিরির পানি দিয়ে চুল ধৌত করতে পারেন। এতে চুল পড়া আস্তে আস্তে কমতে শুরু করবে।
  • ডায়রিয়া নিরাময়ঃ ডায়রিয়া নিরাময় করার জন্য ফিটকিরি প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহার করতে দেখা যায়।
  • মুখের বলিরেখা দূর করেঃ নিয়মিত ফিটকিরি ব্যবহার করলে মুখের বলিরেখা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কারণ ফিটকিরিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের বলিরেখা দূর করার পাশাপাশি ত্বক টানটান করে তোলে।
  • দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধ করেঃ দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধ করার জন্য ফিটকিরি ও লবণের মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন।
  • ঘামাচি দূর করেঃ ফিটকিরির গুঁড়া ঘামাচি স্থানে প্রয়োগ করলে রাতা রাতি ঘামাচি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • ত্বকের দাগ দূর করেঃ ত্বকের যে কোনো দাগ নিরাময় করার জন্য ফিটকিরির ব্যবহার করতে পারেন। কারণ ফিটকিরিতে রয়েছে অ্যান্টিসেপ্টিক বৈশিষ্ট্য যা ত্বকের দাগ হালকা করতে সাহায্য করে।
  • ফেসিয়াল হেয়ার রিমুভ করতে ব্যবহৃত হয়ঃ মেয়েদের মুখের অবাঞ্ছিত লোম খুব সহজেই রিমুভ করা যায় ফিটকিরি মিশ্রিত পানি দ্বারা।
  • কোল্ড সোর প্রতিরোধ করেঃ ঠোঁট ফাটা বা ঠোঁটের ফোলা ভাব দূর করার জন্য ফিটকিরি ব্যবহার করতে পারেন।
  • কিডনির পাথর দূর করেঃ ফিটকিরি কিডনির ছোট পাথর গলাতে অত্যন্ত কার্যকরী। তাই আপনার কিডনিতে যদি ছোট ছোট পাথর হয়ে থাকে তাহলে ফিটকিরির পানি মিশ্রিত করে সেবন করতে পারেন।
  • পেটের গ্যাস কমায়ঃ গ্যাসের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ফিটকিরি দুর্দান্ত কাজ করে থাকে। তাই আপনি চাইলে পেটের গ্যাস কমানোর জন্য ফিটকিরি ব্যবহার করতে পারেন।
  • কানের ব্যথা নিরাময়ে কার্যকরঃ ফিটকিরি এবং সরিষার তেলের মিশ্রণ কানের ব্যথা দূর করে। তাই কানের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ফিটকিরি এবং সরিষার তেল ব্যবহার করতে পারেন।
  • মহিলাদের সাদা স্রাব প্রতিরোধ করেঃ চিকিৎসকেরা বলেন ফিটকিরি সাদাস্রাব সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
  • অ্যাজমার জন্য উপকারীঃ প্রাচীন যুগে শ্বাসকষ্ট বা অ্যাজমার সমস্যায় ফিটকিরি ব্যবহার করা হতো।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করেঃ ফিটকিরি নিয়মিত ব্যবহারে ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • রক্তপাত নিয়ন্ত্রণ করেঃ ফিটকিরি রক্তপাত বন্ধ করতে সক্ষম, বিশেষ করে ছোটখাটো কাটা বা আঘাতে ফিটকিরি ব্যবহার করতে পারেন।
  • মুখের ফোলা কমায়ঃ ফিটকিরির অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য মুখের ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে।
  • পোকামাকড়ের কামড় থেকে মুক্তি দেয়ঃ ফিটকিরি পোকামাকড়ের কামড় থেকে সৃষ্ট জ্বালা এবং ব্যথা কমায় খুব দ্রুত।
  • ত্বকের র‌্যাশ দূর করেঃ ফিটকিরি ত্বকের র‌্যাশ বা অ্যালার্জি কমাতে সহায়ক। তাই আপনার ত্বকে যদি অ্যালার্জি থাকে তাহলে ফিটকিরি ব্যবহার করতে পারেন।
  • মাথার ময়লা দূর করেঃ যাদের মাথায় প্রচুর উকুন বা ময়লা দেখা যায় তারা চাইলে ফিটকিরির পানি দিয়ে মাথা দূয়ে নিতে পারেন। এতে আপনার মাথায় উকুন বা ময়লা থেকে সহজেই মুক্তি পাবেন।
  • জীবাণুমুক্ত রান্নাঘরঃ আমরা সবাই চাই রান্নাঘর জীবাণুমুক্ত রাখতে। তাই আপনিও যদি রান্নাঘর জীবাণুমুক্ত রাখতে চান তাহলে গরম পানিতে একটুকরো ফিটকিরি দিয়ে সেই পানি দিয়ে রান্নাঘর পরিষ্কার করতে পারেন।
  • আঙুলে ঘা হওয়াঃ হাত বা পায়ের আঙুলে পানি ঝমে থাকার কারণে অনেক সময় ঘা হয়ে যায়। আপনি যদি সেই ঘা স্থানে ফিটকিরি ব্যবহার করতে পারেন তাহলে সাথে সাথে ঘা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
এছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায় এই ফিটকিরিতে যা বলে শেষ করার মত নয়। তাই আপনি যদি ফিটকিরি এখনো ব্যবহার করা শুরু না করেন তাহলে শুরু করতে পারেন। আশা করি আপনারা ফিটকিরির ৪০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। চলুন এখন আসি অপকারিতা কি কি রয়েছে? ফিটকিরির তেমন কোনো জটিল অপকারি দিক নেই বললেই চলে, কারণ
ফিটকিরি একটি প্রাকৃতিক উপাদান তাই এর কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। কিন্তু অতিরিক্ত মাত্রায় ব্যবহার করলে নানা রকম অপকারিতা দেখা দিতে পারে। তাই আপনি যদি ফিটকিরি ব্যবহার করতে চান তাহলে অতিরিক্ত ফিটকিরি ব্যবহার থেকে দূরে থাকুন। আর আপনি যদি ফিটকিরির সঠিক নিয়ম সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি পড়ে নিতে পারেন এতে ক্লিয়ার একটা ধারণা পেয়ে যাবেন।

ফিটকিরি কি চুলের জন্য ক্ষতিকর

আমরা অনেকেই বলি ফিটকিরি কি চুলের জন্য ক্ষতিকর। জ্বি ফিটকিরি চুলের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে যদি এর অতিরিক্ত ব্যবহার করেন। কিন্তু আপনি যদি সঠিক নিয়মে আপনার চুলে ফিটকিরি ব্যবহার করতে পারেন তাহলে ক্ষতি থেকে উপকার বেশি পাবেন। যেমনঃ খুশকি দূর, চুলের উজ্জ্বলতা, স্ক্যাল্প পরিষ্কার, ফাঙ্গাল সংক্রমণ প্রতিরোধ ইত্যাদি।

তাই আপনাকে সবার আগে অতিরিক্ত ফিটকিরি ব্যবহার করা বন্ধ করতে হবে এবং সঠিক নিয়মে ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু আপনি যদি অতিরিক্ত কিংবা সঠিক নিয়মে ফিটকিরি ব্যবহার করতে না পারেন তাহলে দেখা দিতে পারে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যা নিচে তুলে দেয়া হল।
  • চুল শুষ্ক করে তুলতে পারেঃ আপনি যদি ফিটকিরি নিয়মিত এবং অতিরিক্ত ব্যবহার করা শুরু করেন তাহলে আপনার চুল শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যেতে পারে।
  • চুল ভাঙা বা দুর্বল হতে পারেঃ অতিরিক্ত ফিটকিরি ব্যবহার করলে চুল ভেঙে যাওয়া বা দুর্বল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এটি চুলের নরমতা নষ্ট করে এবং চুল ভঙ্গুর করে তোলে।
  • ত্বকের জ্বালা সৃষ্টি করতে পারেঃ চুলের গোড়ায় অতিরিক্ত ফিটকিরি ব্যবহার করলে স্ক্যাল্পে জ্বালাপোড়া বা অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে সংবেদনশীল ত্বকে এর প্রভাব বেশি হতে পারে।
  • চুল পড়ার ঝুঁকিঃ অতিরিক্ত শুষ্কতা এবং ত্বকের জ্বালার কারণে চুল পড়ার সমস্যা তৈরি হতে পারে।
একটা কথা মনে রাখবেন যদি ফিটকিরি ঠিক নিয়মে ব্যবহার করতে না পারেন তাহলে এই সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। কিন্তু আপনি যদি সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন ফিটকিরি ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনার চুলের বেশ কিছু উপকারিতা পেয়ে যাবেন। তাই আপনার চুলের যত্নে ফিটকিরি ব্যবহার করতে পারেন সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন এতে উপকার পাবেন।

ফিটকিরির রাসায়নিক নাম ও সংকেত

ফিটকিরির রাসায়নিক নাম ও সংকেত, ফিটকিরির রাসায়নিক নাম হলো পটাশিয়াম অ্যালুমিনিয়াম সালফেট। এটি একটি যৌগিক লবণ এবং এর সাধারণ রাসায়নিক সংকেত বা ফর্মুলা হলোঃ

KAl(SO₄)₂·12H₂O

এটি একটি ডাবল সালফেট লবণ, যা পানিতে দ্রবীভূত হয়ে অ্যালুমিনিয়াম এবং পটাশিয়াম আয়ন তৈরি করে।

ফিটকিরির রাসায়নিক গঠন বোঝাতে কিছু বিষয় গুরুত্বপূর্ণঃ

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় আনারস খেলে কি হয়

  • K = পটাশিয়াম (Potassium)
  • Al = অ্যালুমিনিয়াম (Aluminum)
  • SO₄ = সালফেট আয়ন (Sulfate Ion)
  • 12H₂O = ১২টি জলের অণু (Water of crystallization), যা এটিকে ক্রিস্টালাইন আকার দেয়।
ফিটকিরি মূলত দুটি প্রধান ধরণের হতে পারে—পটাশিয়াম ফিটকিরি এবং অ্যামোনিয়াম ফিটকিরি। তবে সাধারণত পটাশিয়াম ফিটকিরি বেশিরভাগ ব্যবহৃত হয়। আশা করি সুন্দর ভাবে বুঝতে পেরেছেন ফিটকিরির রাসায়নিক নাম ও সংকেত সম্পর্কে।

ফিটকিরি দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায়

ফিটকিরি দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায় ব্রণের সমস্যা আজকাল অনেকের জন্যই একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ত্বকের এই সমস্যায় ভুক্তভোগীদের অনেকেই প্রাকৃতিক সমাধান খোঁজেন, যেখানে ফিটকিরি একটি জনপ্রিয় ও কার্যকরী উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তাই আজকে আমরা আলোচনা করবো কীভাবে ফিটকিরি দিয়ে ব্রণ দূর করা যায় এবং কেন এটি ত্বকের জন্য উপকারী।

কেন ফিটকিরি ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে?

ফিটকিরি মূলত অ্যালুমিনিয়াম সলফেটের প্রাকৃতিক একটি মিশ্রণ যা অ্যান্টিসেপটিক ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন। ত্বকের ব্যাকটেরিয়া দূর করতে, ত্বকের লোমকূপ পরিষ্কার করতে এবং ব্রণের প্রদাহ কমাতে এটি দারুণ কাজ করে। ত্বকে জমে থাকা অতিরিক্ত তেল কমিয়ে এটি লোমকূপ বন্ধ করতে সাহায্য করে, যার ফলে ব্রণ হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।

ফিটকিরি দিয়ে ব্রণ দূর করার সহজ উপায়সমূহ

১. ফিটকিরি

মুখে বয়সের ছাপ দূর করার জন্য ফিটকিরি বেশ কার্যকরী উপাদান হতে পারে। অনেকের বয়স হওয়ার আগেই মুখে বয়সের ছাপ দেখা যায় এই ছাপ থেকে রেহাই পেতে ফিটকিরি ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য নিতে হবে একটুকরো ফিটকিরি সেই ফিটকিরি পানিতে হালকা ভিজিয়ে আপনার ত্বকে ঘষুন ৫ মিনিট। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ দূয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে ৩ দিন ব্যবহার করুন।

২. ফিটকিরি এবং মুলতানি মাটি

 মুখের ব্রণ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মুলতানি মাটি এবং ফিটকিরি একসঙ্গে ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য এক চামচ পরিমাণ মুলতানির মাটি এবং এক চামচ ফিটকিরির গুঁড়া একসঙ্গে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। 
তারপর এই মিশ্রণটি আপনার ত্বকে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে দিন। তারপর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করতে পারেন এতে খুব দ্রুত উপকার পাবেন।

৩. ফিটকিরি ও পানির মিশ্রণ

ফিটকিরি সাধারণ একটি মিশ্রণ ত্বকের ব্রণ দূর করতে বেশ কার্যকরী বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সেই কার্যকরী মিশ্রণটি তৈরি করার জন্য ১/২ চা চামচ ফিটকিরির গুঁড়া এবং ২ টেবিল চামচ পানিতে ভালোভাবে মিশিয়ে তুলোর সাহায্যে এটি ত্বকের ব্রণের ওপর লাগাতে হবে। এরপর ১০-১৫ মিনিট রেখে তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই মিশ্রণটি সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

৪. ফিটকিরি ও গোলাপজল মিশ্রণ

ফিটকিরি ও গোলাপজল একসঙ্গে ব্যবহার করলে ব্রণের দাগ ও লালচেভাব কমাতে সাহায্য করে। তার জন্য ১/২ চা চামচ ফিটকিরির গুঁড়া এবং ১ টেবিল চামচ গোলাপজল মিশিয়ে ত্বকের ব্রণ আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে রাখুন ১০-১৫ মিনিট। এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। এই মিশ্রণটি ত্বককে সতেজ রাখে এবং ব্রণ কমাতে সাহায্য করে।

৫. ফিটকিরি ও মধু মিশ্রণ

মধু প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং ফিটকিরির সাথে মিশে ত্বকের লালচেভাব কমায় ও ত্বককে কোমল রাখে। এর জন্য ১/২ চা চামচ ফিটকিরির গুঁড়া এবং ১ চামচ মধু মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ত্বকের ব্রণের উপর লাগান। ১৫ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। এটি সপ্তাহে একবার ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন।

আপনাদের সুবিধার্থে উপরে পাঁচটি কার্যকরী উপায় তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আপনি যদি এখান থেকে যেকোনো একটি উপায় ফলো করে আপনার ত্বকে প্রয়োগ করতে পারেন তাহলে খুব দ্রুত এর উপকারিতা পারেন।

ফিটকিরি দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করার নিয়ম

ফিটকিরি দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করার নিয়ম, আমাদের বাংলাদেশে কিংবা ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে এখনও বিশুদ্ধ পানি পাওয়া দুষ্কর। তাই যাদের অঞ্চলে পানি বিশুদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তারা চাইলে ফিটকিরির সাহায্য নিয়ে খুব সহজে পানি বিশুদ্ধ করতে পারেন। কারণ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিশুদ্ধ পানির প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
তবে সবার জন্য বিশুদ্ধ পানি সহজলভ্য নয়। পানি বিশুদ্ধ করার জন্য অনেকেই বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করেন, তার মধ্যে ফিটকিরি ব্যবহার একটি প্রচলিত ও সহজ পদ্ধতি। ফিটকিরির সাহায্যে পানি পরিষ্কার করার প্রক্রিয়া সহজ এবং সবার জন্য ব্যবহারে উপযোগী। তাই আজকের এই লেখায় আমরা আলোচনা করবো কীভাবে ফিটকিরি দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করা যায়, এবং কেন এটি কার্যকর।

কেন ফিটকিরি দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করবেন?

ফিটকিরি একটি প্রাকৃতিক যৌগ, যার রাসায়নিক নাম হলো অ্যালুমিনিয়াম, পটাশিয়াম, সালফেট। এর প্রাকৃতিক গুণাবলি আমাদের পানিকে ঝকঝকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। ফিটকিরি পানিতে থাকা ছোট কণা, ময়লা এবং ব্যাকটেরিয়া জমাট বাঁধিয়ে পানির তলায় নিয়ে যেতে সাহায্য করে। যার ফলে পানি থাকে বিশুদ্ধ ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন।

ফিটকিরি দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করার নিয়ম

ফিটকিরি দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করার জন্য কোনো জটিল প্রক্রিয়ার প্রয়োজন নেই। আপনি চাইলে ঘরোয়া উপায় ফলো করে খুব সহজেই পানি বিশুদ্ধ করতে পারেন। তাহলে আসুন ধাপে ধাপে দেখে নিই কীভাবে ফিটকিরি দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করতে হয়। প্রথমে ১-২ গ্রাম ফিটকিরির গুঁড়া বা টুকরো  ১০ লিটার পানির মধ্যে মিশিয়ে নিতে হবে।

এরপর ভালোভাবে নাড়াচাড়া করতে হবে যাতে করে ফিটকিরি পানিতে মিশে যায়। ভালো ভাবে ফিটকিরি মেশানো হয়ে গেলে দেখবেন পানিতে থাকা বিভিন্ন ময়লা, জীবাণু এবং মাইক্রোঅর্গানিজমকে আকর্ষণ করে জমাট বাঁধতে সহায়তা করবে। ফিটকিরি পানিতে ভালো ভাবে মেশানো হয়ে গেলে এক ঘন্টা অপেক্ষা করুন।

এক ঘন্টা অপেক্ষা করার পর দেখবেন ফিটকিরি পানির ছোট ছোট কণাগুলোকে জমাট বেঁধে পানির তলায় নিয়ে যাবে। এবং উপরের অংশে থেকে যাবে পরিষ্কার পানি। তারপর একটি পরিষ্কার পাত্র দিয়ে উপর থেকে পরিষ্কার পানি তুলে সংগ্রহ করতে হবে। আর নিচে যে সমস্ত ময়লা ও জমাট বাঁধা অংশ থাকবে সেটি ফেলে দিতে হবে।
ফিটকিরি দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করার প্রচলন আদিমকাল থেকেই চলে আসছে কারণ ফিটকিরি দামে সস্তা এবং পানি বিশুদ্ধ করতে বেশ কার্যকরী বলে মনে করেন পুষ্টিবিদরা। পুষ্টিবিদরা আরো জানান ফিটকিরি দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করলে পানির মধ্যে থাকা ক্ষতিকর জীবাণু ও ময়লা দূর হয় এবং মানুষের খাওয়ার উপযোগী হয়।

শুধু তাই নয় ফিটকিরি একটি প্রাকৃতিক উপাদান হওয়ায় এটি ব্যবহার করলে কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয় না। তবে ফিটকিরি দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করার সময় কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি। যেমন পানিতে ফিটকিরি অতিরিক্ত পরিমাণে মেশানো উচিত নয়, কারণ অতিরিক্ত ফিটকিরি ব্যবহার করলে পানিতে খনিজ জমা হতে পারে।

এছাড়াও ফিটকিরি মিশিয়ে পানি বিশুদ্ধ করার পর পানি কিছুক্ষণ বিশ্রামে রাখতে ভুলবেন না। তাই আপনি যদি ফিটকিরি দিয়ে পানি বিশুদ্ধ বা পরিষ্কার করতে চান তাহলে আমার দেওয়া নিয়ম গুলো ফলো করে ফিটকিরির সাহায্যে পানি বিশুদ্ধ করতে পারেন।

মুখে ফিটকিরি ব্যবহারের নিয়ম

সৌন্দর্য এবং ত্বকের যত্নে ফিটকিরির ব্যবহার আদিমকাল থেকেই দেখা যাচ্ছে । ফিটকিরিতে প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য থাকার কারণে ফিটকিরি ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় সহায়ক হিসেবে কাজ করে। বিশেষ করে, ব্রণ, ব্ল্যাকহেডস, এবং ত্বকের মসৃণতা বজায় রাখতে মুখে ফিটকিরি ব্যবহার আমরা অনেকেই করে থাকি।

তাহলে চলুন দেখে নেই, কীভাবে মুখে ফিটকিরি ব্যবহার করা যায় এবং কোন কোন নিয়ম মেনে চলতে হবে। এর আগে চলুন জেনে নেই কেন মুখে ফিটকিরি ব্যবহার করবেন?

কেন মুখে ফিটকিরি ব্যবহার করবেন?

ফিটকিরি মুখের ত্বকের জন্য একটি উপকারী উপাদান, যা ত্বকের জীবাণু দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি ত্বকের যত রকমের ছোট ছোট দাগ, ফুসকুড়ি এবং ত্বকের রোমকূপ সঙ্কুচিত করতে সহায়তা করে। ফিটকিরি মুখে অতিরিক্ত তেল দূর করে ত্বককে টানটান রাখতে সাহায্য করে। এজন্যই আমরা অনেকেই ত্বকের যত্নে ফিটকিরি ব্যবহার করি।

মুখে ফিটকিরি ব্যবহারের নিয়ম

১. ফিটকিরি ও পানি মিশ্রণঃ ফিটকিরির সহজতম ব্যবহার হলো ফিটকিরি পানি দিয়ে মিশিয়ে মুখে ব্যবহার করা। এর জন্য ১/২ চা চামচ ফিটকিরির গুঁড়া এবং ১ কাপ পানি মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করা। তারপর একটি তুলোর সাহায্যে মিশ্রণটি মুখে লাগাতে হবে।
বিশেষ করে যেখানে ব্রণ বা ফুসকুড়ি রয়েছে, সেখানে মিশ্রণটি লাগিয়ে ৫-১০ মিনিট রেখে দিন। এরপর মুখ ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার এই মিশ্রণটি ব্যবহার করলে ত্বকের জীবাণু দূর হয় এবং ত্বক মসৃণ থাকে।

২. ফিটকিরি ও গোলাপজল মিশ্রণঃ গোলাপজল ত্বককে সতেজ ও কোমল রাখে, আর ফিটকিরি ত্বকের দাগ কমাতে সহায়তা করে আমরা সবাই জানি। এই মিশ্রণটি মুখের জন্য বেশ কার্যকরী বলে মনে করেন অনেকে। তার জন্য ১/২ চা চামচ ফিটকিরির গুঁড়া এবং ২ টেবিল চামচ গোলাপজল দিয়ে একটি পেষ্ট তৈরি করতে হবে। পেষ্ট তৈরি হয়ে গেলে ত্বকের যেসব স্থানে দাগ রয়েছে সেখানে ৮ থেকে ১০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন এরপর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার এই মিশ্রণ ব্যবহার করলে ত্বকের দাগ ও কালো ছোপ দূর হয়ে যাবে।

৩. ফিটকিরি ও মধু মিশ্রণঃ মধু ত্বকের আর্দ্রতা জোগায়, যা ফিটকিরির সাথে মিশে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক। তার জন্য প্রয়োজন ১/২ চা চামচ ফিটকিরি গুঁড়া এবং ১ টেবিল চামচ মধু। ফিটকিরি ও মধু মিশিয়ে মুখে লাগান এবং ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বককে উজ্জ্বল ও মসৃণ করে তোলে। এটি সপ্তাহে ২ দিন করতে পারেন।

আপনি চাইলে এখান থেকে যে কোনো একটি ফর্মুলা ফলো করে আপনার মুখে প্রয়োগ করতে পারেন। যদি টানা ১৫ দিন এখান থেকে যে কোনো একটি নিয়ম ফলো করতে পারেন তাহলে আপনি নিজেই বুঝতে পারেন ফিটকিরির কি গুনাগুন। তাই আপনি যদি ত্বকের যত্ন করতে ভালোবাসেন তাহলে ফিটকিরি ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

ফিটকিরি মুখে দেওয়ার উপকারিতা

ফিটকিরি এমন একটি উপাদান যা আমাদের চলার পথে নানা কাজে প্রয়োজন হয়। বর্তমান বাজারে বিভিন্ন ধরনের মেডিসিন আশার কারণে ফিটকিরির ব্যবহার আগের তুলনায় অনেক কমে আসছে। কিন্তু আমরা বাজারের যেসব মেডিসিন ব্যবহার করি তাদের থেকে ফিটকিরি কোনো অংশে কম নয়। তাই আপনি চাইলে আপনার ত্বকের উজ্জলতা ধরে রাখার জন্য ফিটকিরি ব্যবহার করতে পারেন।

কিন্তু ফিটকিরি মুখে ব্যবহার করার আগে এর সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে জানতে হবে তা না হলে উপকারের চেয়ে ক্ষতি হতে পারে। তাই ফিটকিরির সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে জানা জরুরি। ফিটকিরি, যার রাসায়নিক নাম অ্যালুমিনিয়াম পটাশিয়াম সালফেট, আমাদের ত্বকের জন্য একটি উপকারী উপাদান। ফিটকিরির প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণাগুণ
ত্বকের নানা সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। ব্রণ, ফুসকুড়ি, ত্বকের কালো দাগ, মুখে বয়সের ছাপ ইত্যাদি সমস্যায় ফিটকিরি একটি নিরাপদ এবং কার্যকরী সমাধান হিসেবে কাজ করে। তাহলে চলুন, আজকে ফিটকিরি মুখে দেওয়ার উপকারিতা নিয়ে কিছু কথা বলি।

১. ব্রণ এবং ফুসকুড়ি দূর করতে সহায়কঃ ব্রণ এবং ফুসকুড়ির সমস্যা প্রায় সবার জন্যই অস্বস্তিকর মনে হয়। আবার অনেক সময় দেখা যায় ত্বকের অতিরিক্ত তেল জমে লোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়, এবং এর ফলে ব্রণ বা ফুসকুড়ি দেখা দেয়। ফিটকিরি মুখে দিলে ত্বকের লোমকূপ পরিষ্কার হয় এবং জীবাণু দূর হয়, ফলে ব্রণের প্রকোপ কমে। ফিটকিরি অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল হওয়ায় এটি ত্বকের জীবাণু ধ্বংস করে এবং প্রদাহ কমায় খুব সহজে।

২. ত্বকের দাগ ও কালো ছোপ হালকা করেঃ অনেকের ত্বকে ব্রণের দাগ কিংবা কালো ছোপ থাকে যা দেখতে ভালো লাগে না। ফিটকিরি মুখের এই দাগ হালকা করতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের টোন সমান করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে। সপ্তাহে ৩ দিন ফিটকিরির হালকা মিশ্রণ মুখে লাগালে দাগগুলো আস্তে আস্তে হালকা হতে থাকে।

৩. মুখের অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণঃ মুখে অতিরিক্ত তেল জমে অনেক সময় ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যায়, যা ব্রণ এবং অন্যান্য ত্বকের সমস্যার কারণ হতে পারে। ফিটকিরি ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ত্বককে টানটান রাখে। ত্বককে শুষ্ক রাখার পাশাপাশি এটি ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা বজায় রাখে।

৪. মুখের রোমকূপ ছোট করতে সহায়কঃ মুখের বড় রোমকূপ অনেকের ত্বকে দেখা যায়, যা ময়লা এবং তেল জমার একটি কারণ। ফিটকিরি মুখে লাগালে রোমকূপ সঙ্কুচিত হয় এবং ত্বক মসৃণ হয়। ফিটকিরি ত্বকের লোমকূপ বন্ধ না করে বরং সেগুলোর আকার ছোট করতে সাহায্য করে, যার ফলে ত্বক আরও স্বাস্থ্যকর দেখায়।

৫. প্রাকৃতিক এক্সফোলিয়েন্ট হিসেবে কাজ করেঃ ফিটকিরি ত্বকের মরা কোষ দূর করতে কার্যকরী। ফিটকিরি একটি প্রাকৃতিক এক্সফোলিয়েন্ট হিসেবে কাজ করে, যার ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। সপ্তাহে একবার ফিটকিরির মিশ্রণ মুখে লাগিয়ে হালকা হাতে মালিশ করলে ত্বকের মৃত কোষ দূর হয় এবং ত্বক সতেজ ও উজ্জ্বল থাকে।
ফিটকিরি মুখে দেওয়ার উপকারিতা আরো অনেক রয়েছে যা বলে শেষ করার মত নয়। বর্তমানে রাস্তার মোড়ে মোড়ে পার্লার হওয়ার কারণে ফিটকিরির ব্যবহার আমরা প্রায় ভুলেই গেছি। কিন্তু আপনি যদি ফিটকিরির উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারেন তাহলে টাকা খরচ করে পার্লারে যাওয়া বাদ দিয়ে ঘরে বসে ফিটকিরি দিয়ে ত্বকের যত্ন শুরু করে দিবেন।

ফিটকিরির ৪০ টি উপকারিতা ও অপকারিতার শেষ কথা

ফিটকিরি একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নানা ধরনের কাজ করে থাকে।বিশেষজ্ঞদের মতে ফিটকিরির কমপক্ষে ৪০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। আপনি যদি এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে থাকেন তাহলে ইতিমধ্যে সমস্ত উপকারিতা সম্পর্কে জানতে

পারছেন। আর যদি পুরো পোস্টটি না পড়ে থাকেন তাহলে আর্টিকেলটি পড়ে নিতে পারেন এতে ফিটকিরি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়ে যাবেন। আজকের মত এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ্য থাকবেন। পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আল্লাহ হাফেজ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মারিয়া অনলাইন ব্লকের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url