হার্ডডিস্ক কি সুবিধা ও অসুবিধা - হার্ডডিস্ক কত প্রকার ও কি কি
হার্ডডিস্ক কাকে বলে, হার্ডডিক্স কত প্রকার ও কি কি, হার্ড ডিস্ক এর কাজ কি, হার্ডডিস্কের ধারণ ক্ষমতা কত, হার্ডডিস্ক এর সুবিধা ও অসুবিধা। আপনার মনে যদি এই সকল প্রশ্নের উত্তর অজানা থাকে তাহলে এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ে নিতে পারেন। এতে খুব সহজেই এই সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
হার্ডডিস্ক এর সুবিধা ও অসুবিধা |
হার্ডডিস্ক একটি আধুনিক যন্ত্র যা বিভিন্ন তথ্য সংরক্ষণে রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়। কম্পিউটারের ক্ষেত্রে হার্ডডিস্ক মেমোরির মত কাজ করে থাকে যেখানে প্রয়োজনীয় এবং অপ্রয়োজনীয় সকল ধরনের ফাইল কিংবা ডাটা সংরক্ষণে রাখা হয়। তাই আপনার যদি একটি কম্পিউটার থাকে সেক্ষেত্রে হার্ডডিস্ক ব্যবহার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সূচীপত্রঃ হার্ডডিস্ক এর সুবিধা ও অসুবিধা
- হার্ডডিস্ক কাকে বলে
- হার্ড ডিস্ক এর কাজ কি
- হার্ডডিস্ক কত প্রকার ও কি কি
- হার্ডডিস্কের ধারণ ক্ষমতা কত
- হার্ডডিস্ক এর সুবিধা ও অসুবিধা
- হার্ডডিস্ক এর সুবিধা ও অসুবিধা শেষ কথা
হার্ডডিস্ক কাকে বলে
হার্ডডিস্ক কাকে বলে, হার্ড ডিস্ক, যাকে হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ (HDD), ফিক্সড ড্রাইভ, বা শুধু ডিস্কও বলা হয়, তা হলো ডেটা সংরক্ষণের একটি ইলেকট্রোমেকানিক্যাল ডিভাইস। এটি কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম, অ্যাপ্লিকেশন, ফাইল এবং অন্যান্য ডেটা স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করে।
সহজ ভাবে বললে বলা যায় হার্ডডিস্ক হলো কম্পিউটারের মেমোরি। যেমন মোবাইলে মেমোরি ব্যবহার করি তেমনি কম্পিউটারে মেমোরির বদলে হার্ডডিস্ক ব্যবহার করা হয়। যেখানে প্রয়োজনীয় তথ্য এবং ডাটা সংরক্ষণ করে রাখা যায়।
হার্ড ডিস্ক এর কাজ কি
হার্ড ডিস্ক এর কাজ কি, আমাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় ডাটা বা তথ্য সংরক্ষিত রাখার জন্য আমরা অনেকেই হার্ডডিস্ক ব্যবহার করি। হার্ডডিস্ক এর কাজ কি এই সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক হার্ডডিস্ক এর কাজ কি?
পড়া বা ডাটা লেখাঃ হার্ডডিস্ক ডেটা লেখা এবং পড়ার জন্য ব্যবহার করা হয়। যখন আপনি কোন ফাইল তৈরি করেন বা সংরক্ষণ করেন তখন হার্ডডিস্ক সেই ফাইলের ডেটা সংরক্ষণ করে রাখে। আবার আপনি কোন ফাইল খোলেন তখন হার্ডডিস্ক সেই ফাইল এর ডেটা পড়ে এবং আপনার কম্পিউটারে প্রদর্শন করে।
অপারেটিং সিস্টেম এবং অ্যাপ্লিকেশন লোড করাঃ হার্ডডিস্ক অপারেটিং সিস্টেম এবং অ্যাপ্লিকেশন লোড করার জন্য প্রচুর ব্যবহার করা হয়। যখন আপনি আপনার কম্পিউটার চালু করেন তখন হার্ডডিস্ক অপারেটিং সিস্টেম লোড করে। অপারেটিং সিস্টেম লোড হওয়ার পর আপনি অ্যাপ্লিকেশন চালাতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ বায়োমেট্রিক্স কাকে বলে
ব্যবহারকারীর ডেটা সংরক্ষণ করাঃ হার্ডডিস্ক ব্যবহারকারীর ডাটা সংরক্ষণ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। ব্যবহারকারী ডেটাতে ছবি, ভিডিও, পিডিএফ, সঙ্গীত, দস্তান্তেজ এছাড়া আরো অন্যান্য ফাইলগুলোও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যে ডেটা গুলো খুব সহজেই সংরক্ষণ করে রাখতে পারে।
সহজ ভাবে বললে হার্ডডিস্ক হলো মোবাইল ফোনের মেমোরির মতো। মোবাইল ফোনের মেমোরিতে যেমন প্রয়োজনীয় তথ্য রেখে দেওয়া হয়। তেমনিভাবে কম্পিউটারে হার্ডডিস্কের ভেতর সকল প্রয়োজনীয় তথ্য সংরক্ষিত রাখা হয় যাতে পরবর্তীতে কাজে লাগাতে পারে।
হার্ডডিস্ক কত প্রকার ও কি কি
হার্ডডিস্ক কত প্রকার ও কি কি, হার্ডডিস্ক সাধারণত দুই প্রকার কিন্তু এর আরো কিছু প্রকারভেদ রয়েছে যা নিচে ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করব। আপনার জন্য কোন হার্ডডিস্কটি ভালো হবে তা খুব সহজেই নির্বাচন করতে পারবেন। কারণ আজকে বিভিন্ন ধরনের হার্ডডিস্ক নিয়ে আলাপ-আলোচনা করব।
1. HDD (Hard Disk Drive):
প্লেটারঃ ডেটা সংরক্ষণের জন্য ঘূর্ণায়মান চৌম্বকীয় ডিস্ক ব্যবহার করে।
রিড/রাইট হেডঃ প্লেটার থেকে ডেটা পড়ে এবং প্লেটারে ডেটা লিখে।
কন্ট্রোলার বোর্ডঃ হার্ড ডিস্কের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে।
সস্তাঃ SSD এর তুলনায় কম দামি।
বেশি স্টোরেজঃ SSD এর তুলনায় বেশি ডেটা সংরক্ষণ করতে পারে।
শব্দঃ SSD এর তুলনায় বেশি শব্দ করে।
গতিঃ SSD এর তুলনায় ধীর।
দীর্ঘস্থায়িত্বঃ SSD এর তুলনায় কম দীর্ঘস্থায়ী।
আরো পড়ুনঃ বায়োমেট্রিক্স এর প্রকারভেদ
HDD-র বিভিন্ন ধরণ রয়েছে যেমনঃ
PATA (Parallel ATA): পুরানো ধরনের HDD।
SATA (Serial ATA): নতুন ধরনের HDD, PATA এর তুলনায় দ্রুত।
SCSI (Small Computer System Interface): উচ্চ-কার্যকারিতা HDD, সাধারণত সার্ভারে ব্যবহৃত হয়।
2. SSD (Solid State Drive):
ফ্ল্যাশ মেমরিঃ ডেটা সংরক্ষণের জন্য ইলেকট্রনিক চিপ ব্যবহার করে।
HDD এর তুলনায় অনেক দ্রুতঃ ডেটা পড়া এবং লেখার ক্ষেত্রে HDD এর চেয়ে অনেক দ্রুত।
শব্দহীনঃ HDD এর মতো শব্দ করে না।
দীর্ঘস্থায়ীঃ HDD এর তুলনায় বেশি দীর্ঘস্থায়ী।
ব্যয়বহুলঃ HDD এর তুলনায় বেশি দামি।
কম স্টোরেজঃ HDD এর তুলনায় কম ডেটা সংরক্ষণ করতে পারে।
আরো পড়ুনঃ বায়োমেট্রিক্স এর সুবিধা ও অসুবিধা
SSD-র বিভিন্ন ধরণ:
SATA SSD: SATA HDD-র সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
NVMe SSD: PCIe (Peripheral Component Interconnect Express) বাস ব্যবহার করে, SATA SSD এর তুলনায়ও দ্রুত।
কোন ধরণের হার্ডডিস্ক আপনার জন্য উপযুক্ত তা নির্ভর করে আপনার বাজেট, ডেটা স্টোরেজের চাহিদা এবং কত দ্রুত ডেটা অ্যাক্সেস করতে চান তার উপর। আশা করি বুঝতে পেরেছেন আপনার জন্য কোন হার্ডডিস্কটি সব চাইতে ভালো হবে।
হার্ডডিস্কের ধারণ ক্ষমতা কত
হার্ডডিস্কের ধারণ ক্ষমতা কত, হার্ডডিস্ক এর ধারণ ক্ষমতা সম্পর্কে একুরেট ধারণা দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ একাক হার্ডডিস্ক এর ক্ষেত্রে এক এক রকম ধারণ ক্ষমতা রয়েছে তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন হার্ডডিস্ক এর ধারন ক্ষমতা কি রকম রয়েছে। হার্ডডিস্কের ধারণ ক্ষমতা বিভিন্ন ধরণের হার্ডডিস্কের উপর নির্ভর করে। যেমন
HDD (Hard Disk Drive):
পুরানো HDD: 500GB থেকে 2TB পর্যন্ত।
নতুন HDD: 1TB থেকে 8TB পর্যন্ত।
উচ্চ-কার্যকারিতা HDD: 10TB পর্যন্ত।
SSD (Solid State Drive):
সাধারণ SSD: 128GB থেকে 2TB পর্যন্ত।
উচ্চ-কার্যকারিতা SSD: 4TB পর্যন্ত।
বর্তমানে বাজারে 500GB থেকে 16TB পর্যন্ত ধারণ ক্ষমতার হার্ডডিস্ক পাওয়া যায়। তাই কত ধারণ ক্ষমতার হার্ডডিস্ক আপনার জন্য উপযুক্ত তা নির্ভর করে আপনার ডেটা স্টোরেজের চাহিদার উপর।
হার্ডডিস্ক এর সুবিধা ও অসুবিধা
হার্ডডিস্ক এর সুবিধা ও অসুবিধা, হার্ডডিস্ক ব্যবহার করার আগে অবশ্যই এর সুবিধা এবং অসুবিধা গুলো সম্পর্কে জানতে হবে। কারণ হার্ডডিস্ক এ যেমন সুবিধা রয়েছে তেমনি অনেকগুলো অসুবিধাও রয়েছে যা ব্যবহার করার আগে অবশ্যই জেনে রাখা প্রয়োজন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক হার্ডডিস্ক এর সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে।
হার্ডডিস্ক এর সুবিধা
বড় স্টোরেজ ক্ষমতাঃ হার্ডডিস্ক SSD-এর তুলনায় অনেক বেশি ডেটা স্টোর করতে পারে। বাজারে 16TB পর্যন্ত ধারণ ক্ষমতার হার্ডডিস্ক পাওয়া যায়।
কম খরচঃ SSD-এর তুলনায় হার্ডডিস্ক অনেক কম দামি। একই স্টোরেজ ক্ষমতার জন্য SSD-এর দাম হার্ডডিস্কের চেয়ে অনেক বেশি।
দীর্ঘস্থায়িত্বঃ HDD-এর দীর্ঘস্থায়িত্ব SSD-এর তুলনায় বেশি। HDD-এর ডেটা রিকভারিও SSD-এর তুলনায় সহজ।
পারিবারিক ব্যবহারের জন্য উপযুক্তঃ যারা ছবি, ভিডিও, গান, ডকুমেন্ট ইত্যাদি স্টোর করার জন্য ডিভাইস ব্যবহার করেন, তাদের জন্য HDD ভালো বিকল্প হবে।
নিরাপত্তাঃ নিরাপত্তার কথা চিন্তা করলে হার্ডডিক্স নিরাপত্তার জন্য শ্রেষ্ঠ।
হার্ডডিক্স এর অসুবিধাঃ
গতিঃ SSD-এর তুলনায় HDD অনেক ধীর। SSD ডেটা রিডিং এবং রাইটিং-এ অনেক দ্রুত কাজ করে।
শব্দঃ HDD SSD-এর তুলনায় বেশি শব্দ করে। HDD-এর মোটর ঘুরার কারণে শব্দ অনেক বেশি হয়।
শক্তির খরচঃ HDD SSD-এর তুলনায় বেশি বিদ্যুৎ খরচ করে।
চঃক্ষতিপ্রবণঃ HDD-এর ভেতরে ঘূর্ণায়মান ডিস্ক থাকায় এটি SSD-এর তুলনায় বেশি ক্ষতিপ্রবণ হয়।
মেরামতঃ হার্ডডিক্স নষ্ট হলে কোনভাবেই মেরামত করা সম্ভব নয়।
ভাইরাসঃ হার্ডডিক্সে ভাইরাস আক্রমণ করলে সাথে সাথে নষ্ট হয়ে যায়।
ক্যারিঃ এক একটা হার্ডডিক্স অনেক অংশে বাড়ি হয়ে থাকে যা ক্যারি করার জন্য ঝামেলা মনে হতে পারে।
হার্ডডিস্ক এর সুবিধা ও অসুবিধা শেষ কথা
আপনি যদি কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপ ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আজকের আর্টিকেলে হার্ডডিস্ক এর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। আপনি যদি ইতিমধ্যে এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে থাকেন তাহলে হার্ডডিস্কের অনেকগুলো পয়েন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন।
আপনি যদি নিয়মিত এরকম সঠিক ইনফরমেশন পেতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন। কারণ আমাদের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন রিসার্চের মাধ্যমে আর্টিকেল পাবলিস্ট করা হয়। তাই নিয়মিত বিভিন্ন ক্যাটাগরির পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন আল্লাহ হাফেজ।
মারিয়া অনলাইন ব্লকের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url