বরই পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা - চুলকানিতে বরই পাতার ব্যবহার

খালি পেটে তোকমা খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা জানতে ক্লিক করুনবরই আমাদের শরীরের জন্য প্রচুর উপকার ভয়ে আনে। কিন্তু আমরা অনেকেই বরই পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানি না। তাই আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্জন্ত বরই পাতার বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তাই আপনি যদি বরই পাতা নিয়ে সঠিক ধারণা লাভ করতে চান তাহলে আমার লেখা আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে শুরু থেকে শেষ পর্জন্ত পড়ে নিতে পারেন।
বরই পাতা
বরই পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

কারণ আমার লেখা প্রত্যেকটি আর্টিকেল বিভিন্ন রির্সাচ করে লেখা হয়। বরই পাতার যে এত গুনাগুন রয়েছে আজকের আর্টিকেলটি না পড়লে আপনারা বুঝতে পারবেন না। পুষ্টিবিদরা বলেন আদিম যুগের মানুষেরা রোগের হাত থেকে বেচে থাকার জন্য বিভিন্ন গাছের সাহায্য নিয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম একটি গাছের নাম হলো বরই গাছ।

পেজ সূচিপত্রঃ বরই পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

বরই পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

আমরা সবাই বরই খেতে পছন্দ করি কিন্তু আমরা অনেকেই বরই পাতার উপকারিতা সম্পর্কে অবগত নই। তাই আমি আজকে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব বরই পাতার সকল উপকারি দিক নিয়ে যা আপনাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনে আসে। আমাদের মুসলিম জাতির বিশ্বনবী এই বরই পাতা নিয়ে অনেক কথা বলেছেন যা আমাদের সকলের জেনে রাখা প্রয়োজন।
বরই পাতা

বরই পাতা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। বিশেষ করে যাদের শরীরে এলার্জি বা ঘা পচরা এমনকি চর্মরোগ রয়েছে তাদের জন্য বরই পাতার কোনো তুলনা নেই। তাহলে চলুন বেশি সময় নষ্ট না করে বরই পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই।

১। এলার্জি বা চর্মরোগঃ এলার্জি নেই এমন মানুষ পাওয়া দুস্কর কারণ কম বেশি সবার এলার্জি বা চর্মরোগের সমস্যা রয়েছে। তাই আপনি যদি চিরতরের জন্য এলার্জি বা চর্মরোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে চান তাহলে প্রথমে বরই গাছের নিচে গিয়ে বেশ কয়েকটা বরই পাতা ছিরে নিন। এরপর সেই পাতা গুলো ভালো করে পানিতে ভিজিয়ে পরিষ্কার করে নিন। তারপর ব্লেন্ডারে বা পাটার সাহায্যে রস বের করে নিন। এই সব কাজ হয়ে গেলে চা চামচের এক চামচ পরিমাণ রস রাতে ঘুমানোর আগে খেয়ে ফেলুন। তাহলে দেখবেন এলার্জি বা চর্মরোগ চিরতরের জন্য গায়েব।

২। দাঁতের ব্যাথাঃ আপনার যদি দাঁতের ব্যথা থেকে থাকে তাহলে প্রথমে কয়েকটা কচি বরই পাতা পেরে নিয়ে পরিস্কার করে নিন। এরপর সেই পাতা গুলো আস্তে আস্তে চিবাতে শুরু করুন তাহলে দেখবেন অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে ব্যথা কমতে শুরু করেছে।

৩। গ্যাসট্রিক বা আলসারঃ যাদের গ্যাসট্রিক বা আলসার রয়েছে তারা বরই পাতা খেতে পারেন। কারণ বরই পাতায় রয়েছে সোডিয়াম যা আমাদের দেহের গ্যাসট্রিক বা আলসার রোধ করতে সাহায্য করে। তার জন্য প্রথমে বরই পাতা পরিস্কার করে কয়েকটি পাতা চিবিয়ে খেতে হবে।

৪। টিউমারঃ বরই পাতায় রয়েছে বিভিন্ন ধরনের উপাদান তার মধ্যে একটি হলো ফেনোলিক ও ফ্ল্যাভোনয়েড যা আমাদের শরীরের টিউমার নিরাময় করতে সাহায্য করে। এর জন্য সপ্তাহের ৩ দিন বরই পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন আবার আপনি চাইলে রস করেও খেতে পারেন।

৫। দাগ নিরাময়ঃ আপনার শরীরে যদি কোনো ধরনের দাগ থেকে থাকে তাহলে বরই পাতা ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য প্রথমে কয়েকটি বরই পাতা পেরে পানি দিয়ে পরিস্কার করে পেস্ট করে নিন। তারপর সেই পেস্ট যেখানে দাগ হয়েছে সেখানে লাগিয়ে নিন। এই ভাবে কয়েক দিন লাগালে দাগ থেকে খুব সহজেই মুক্তি পাবেন।

৬। চুল পড়া বন্ধঃ অনেক সময় দেখা যায় পুষ্টুর অভাবে অনেক বেশি চুল পড়তে শুরু করে যার কারণে অকালে মাথা টাক হয়ে যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বরই পাতার সাহায্য নিতে পারেন। এর জন্য কয়েকটা বরই পাতা পেরে পানিতে ভিজিয়ে পরিস্কার করুন। তারপর বরই পাতা গুলো পেস্ট করে নিন। এরপর কয়েকটি তুলসি পাতা ও আমলা মিশিয়ে সুন্দর করে পেস্ট তৈরি করুন তারপর সপ্তাহে ৩ দিন এই পেস্ট আপনার চুলে ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগিয়ে রেখে গোসল করে ফেলুন।

৭। জ্বর সর্দি কাশিঃ অনেকের মৌসুমী জ্বর সর্দি কাশি দেখা যায় তাদের জন্য বরই পাতা খুবই উপকারি। তাই আপনারও যদি এই সমস্যা থেকে থাকে তাহলে কয়েকটি কচি বরই পাতা পেরে চিবিয়ে খেতে পারেন তাহলে দেখবেন খুব সহজে জ্বর সর্দি কাশি থেকে মুক্তি পাবেন।

৮। ত্বক সুন্দরঃ ত্বকের সুন্দর্য বাড়াতে চায় না এমন মানুষ পাওয়া যাবে না কারণ আমরা সবাই চাই ত্বক সুন্দর ও ফর্সা হোক। তাই আপনি যদি রুপচর্চ্চা করতে পছন্দ করেন তাহলে বরই পাতা ব্যবহার করতে পারেন। কারণ বরই পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যামাইনো এসিড, স্কোয়াট এসিড, বিটা-ক্যারোটিন যা আমাদের ত্বকের সুন্দর্য বূদ্ধি করতে সাহায্য করে।

এমনকি মুখের যে কোনো ব্রণের দাগ বা মুখের বয়সের ছাপসহ বিভিন্ন দাগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এর জন্য ১০ থেকে ১২ টা বরই পাতা নিয়ে ভালো মতো পেস্ট করে নিতে হবে এরপর এক চা চামচ মধুর সাথে পেস্টটি সুন্দর করে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন ৩০ থেকে ৪০ মিনিট তারপর ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে ৪ দিন করুন দেখবেন আপনার ত্বক উজ্জল ও টানটান হতে শুরু করেছে এমনকি মুখের বয়সের ছাপও চলে যাবে।

৯। রক্ত আমাশাঃ যারা রক্ত আমাশয় ভুগছেন তাদের জন্য বরই পাতা হলো মহা ঔষধ। কারণ বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত যে বরই পাতা রক্ত আমাশয় প্রচুর উপকারিতা পাওয়া যায়। তার জন্য ৮ থেকে ১০ টি বরই পাতা চিবিয়ে অথবা থেতো করে রস খেতে পারেন তাহলে দেখবেন খুব সহজে রক্ত আমাশয় দূর হয়ে গেছে।

১০। ওজন কমায়ঃ আপনার শরীর যদি দিন দিন বাড়তে শুরু করে তাহলে আমার দেওয়া নিয়মে বরই পাতা ব্যবহার করতে পারেন। কারণ বরই পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইভার যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। তার জন্য ১০ থেকে ১২ টি কচি বরই পাতা নিয়ে নিন এরপর সেই পাতা গুলো বেটে রস বের করুন। এবার এই রস টুকু সকালে ঘুম থেকে উঠেই পান করুন। আপনি যদি এটি সপ্তাহে ৪-৫ দিন পান করতে পারেন তাহলে দেখবেন কয়েক দিনের ব্যবধানে আপনার শরীর আগের তুলনায় অনেক অংশে কমে গেছে।

বরই পাতার অপকারিতা

বরই পাতার অপকারিতা নেই বললেই চলে কারণ বরই পাতার অপকারিতার চেয়ে উপকারিতা বেশি দেখা যায়। অল্প কিছু অপকারি দিক দেখা যায় যা আমি আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব। চিকিৎসকের মতে পরিমাণ মত বরই পাতায় কোনো ধরনের অপকারিতা দেখা যায় না। অর্থাৎ আপনি যদি পরিমাণের

চেয়ে বেশি ব্যবহার বা পান করে থাকেন তাহলে না ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাহলে চলুন জেনে নেই অতিরিক্ত বরই পাতায় কি কি অপকারিতা রয়েছে। বরই পাতার অপকারিতা গুলো নিম্নে আলোচনা করা হলো।

১। হাঁপানি  বা শ্বাসকষ্টঃ যাদের আগে থেকেই হাঁপানি  বা শ্বাসকষ্টে ভুগছেন তারা বরই পাতা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করবেন। কারণ এতে আপনার ক্ষতি হতে পারে।

২। মুখের রুচি কমে যায়ঃ অতিরিক্ত বরই পাতার রস খেলে মুখের রুচি কমতে শুরু করে।

৩। ডায়াবেটিসঃ ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বরই পাতা না খাওয়াই  ভালো হবে। আর যদিও খেতে চান তাহলে পরিমাণ মত খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
৪। বরই পাতা না ধুয়ে বা পানি দিয়ে পরিষ্কার না করে কখনই ব্যবহার করা উচিত হবে না। আপনারাও ব্যবহার করবেন না।

৫। স্বাস্থ্যগত যে কোনো সমস্যায় পড়লে একজন অবিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরী।

 বরই পাতার গোসল রুকইয়াহ

বরই পাতার গোসল রুকইয়াহ সম্পর্কে আমরা অনেকেই অবগত নই তাই আপনাদের সুবিধার্থে আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা করব। কোরআন হাদিস পড়লে বোঝা যায় বরই পাতার বিশেষ গুণ সম্পর্কে। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন বরই গাছ হল একটি জান্নাতি গাছ যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক প্রয়োজন আসে।

অনেক সময় দেখা যায় নিজের বাড়ির মানুষ কিংবা বন্ধু-বান্ধব আপনার ক্ষতি করার জন্য জাদুর সাহায্য নিয়ে থাকে। তাই এই জাদু থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বরই পাতার গোসল রুকাইয়াহর পরামর্শ দিয়ে থাকে আলেমগন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক বরই পাতার গোসল রুকাইয়াহ সম্পর্কে। এর জন্য প্রথমে পরিষ্কার এক বালতি পানি নিন।
তারপর বরই গাছ থেকে সাতটি কচি সবুজ পাতা পেরে নিন। এ সমস্ত কাজ হয়ে গেলে পাতাগুলো পানি দিয়ে সুন্দর করে পরিষ্কার করে নিন তারপর পাতাগুলো ব্লেন্ডারে কিংবা পাটার সাহায্যে পেস্ট করে নিন।পেস্ট করা হয়ে গেলে বালতির পানিতে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। তারপর কোরআনের আয়াত পড়তে থাকুন যেমনঃ
  • সূরা ফাতিহা
  • আয়াতুল কুরসী
  • সূরা ইখলাস, ফালাক, নাস
সবগুলোই তিনবার করে পড়ে নিবেন এবং পড়ার মাঝে মাঝে বালতিতে ফু দিতে থাকবেন। তারপর বালতির ভেতর থেকে তিন ঢোগ পানি পান করে নিবেন। আর একটা কথা মনে রাখবেন বালতির পানি যেন সাধারণ পানি হয় অনেকেই আছেন পানি ফুটিয়ে তারপর রুকাইয়াহ গোসল করেন এটি করা উচিত নয়। আবার আপনি চাইলে আমার দেওয়া নিচের আয়াত গুলো পড়ে পড়ে বালতিতে ফু দিতে পারেন যেমনঃ
  • সুরা আরাফ ১১৭-১২২
  • সুরা ইউনুস ৮১-৮২
  • সুরা তহা ৬৯
আপনি যদি আমার দেওয়া এই নিয়মগুলো ফলো করতে পারেন তাহলে খুব সহজেই জাদুর হাত থেকে রক্ষা পাবেন। কারণ জাদু নষ্ট করার জন্য বড় বড় আলেমে দ্বীন এই পরামর্শই দিয়ে থাকে। আর একটি কথা মনে রাখবেন সেটি হল আয়াতগুলো পড়ার সময় অবশ্যই গোসল খানার বাইরে আয়াতগুলো করার চেষ্টা করবেন।

আমার দেওয়া এই সমস্ত কাজ সম্পূর্ণ করার পর আল্লাহর উপর ভরসা রাখবেন কারণ আমাদের সৃষ্টিকর্তার উপরে ভরসা রাখা খুবই জরুরী তিনি চাইলে এই উসিলায় সহজেই আপনাকে জাদুর হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। আমরা কম বেশি সবাই জানি জাদু-টোনা করা মোটেই ভালো কাজ নয় তাই আমরা সকলেই এই সমস্ত কাজ থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ।

চুলকানিতে বরই পাতার ব্যবহার

চুলকানিতে বরই পাতার ব্যবহার সম্পর্কে জানার আগে জানতে হবে চুলকানি বা এলার্জি কি কারণে হয়।বিশেষজ্ঞদের মতে চুলকানি বা এলার্জি বেশিরভাগ খাবার থেকে পাওয়া যায়। এছাড়াও শরীরের অযত্নেও চুলকানি বা এলার্জি দেখা যায়। কিন্তু এই চুলকানি বা এলার্জি বিভিন্ন ঔষধের মাধ্যমে খুব সহজেই নিরাময় করা যায় সুতরাং চুলকানি বা এলার্জি বড় ধরনের কোন সমস্যা নয়।

কিন্তু আপনি চাইলে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই ঘরে বসে আমার দেওয়া নিয়ম ফলো করে সহজেই চুলকানি বা এলার্জি থেকে চিরতরের জন্য মুক্তি পেতে পারেন। চিকিৎসকেরা বলেন যদি 100 বছর পুরনো চুলকানি বা এলার্জি থেকে থাকে তাহলে বরই পাতা ব্যবহার করুন তাহলে খুব সহজেই এর থেকে রক্ষা পাবেন।
তার জন্য প্রথমে এক মুঠো কিংবা দুই মুঠো কচি সবুজ বরই পাতা পেরে নিন এরপর পাতাগুলো পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। পরিষ্কার করা হয়ে গেলে পাতাগুলো ব্লেন্ডার কিংবা পাটার সাহায্যে থেতো করে রস বের করে নিন। তারপর ছাকনির সাহায্যে আধা কাপ রস বের করে নিন। এরপর সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে রসটুকু খেয়ে নিন।

যদি রস খেতে কোন ধরনের সমস্যা হয় তাহলে রসের সাথে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে পান করতে পারেন তাহলে দেখবেন খুব সহজেই খেতে পারছেন। আশা করা যায় আপনি যদি এই নিয়মে টানা সাত দিন চলতে পারেন তাহলে কোন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই চিরতরের জন্য চুলকানি বা এলার্জি থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন।

বরই পাতার উপকারিতা চুলের জন্য

বরই পাতার উপকারিতা চুলের জন্য ব্যাপক উপকারি আমরা কম বেশি সবাই জানি। চুলের যত্ন করতে চায় না এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। আবার অনেকে চুল পড়া বন্ধ বা নতুন চুল গজাতে বিভিন্ন ধরনের ঔষধ ব্যবহার করে থাকে কিন্তু তারপরেও দেখা যায় চুল পড়া বন্ধ হতে চায় না। তাই আমি আজকে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব কিভাবে আপনার মাথার চুল পড়া বন্ধ করবেন।
বরই পাতা

এর জন্য ব্যবহার করতে পারেন বরই পাতা। কারণ চিকিৎসকেরা বলেন বরই পাতা চুলের জন্য খুবই উপকারি। কিন্তু আপনি যদি চিরেতরের জন্য চুল পড়া থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে বরই পাতার সাথে তুলসী পাতা ও আমলা ব্যবহার করতে পারেন কোনো ধরনের পারশপ্রকিয়া ছাড়াই। তাহলে চলুন জেনে নেই কিভাবে এই মিশ্রণটি টেরি করা যায়।
এর জন্য প্রথমে বরই পাতা, তুলসী পাতা, আমলা ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর পাতা ও আমলা এক সঙ্গে মিশিয়ে একটা পেস্ট টেরি করতে হবে। পেস্ট টেরি হয়ে গেলে সেই পেস্টটি পাঁচ মিনিট যাবত মাথায় মাসাস করতে হবে। এরপর ২০ থেকে ২৫ মিনিট অপেক্ষা করে গোসল করে নিতে হবে। আশা করা যায় আপনি যদি এই নিয়মে টানা ৩০ দিন ব্যবহার করতে পারেন তাহলে চুল পড়ার

হাত থেকে খুব সহজে মুক্তি পাবেন এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে। আবার আপনার আসে পাশে যদি এই তিন উপকরণ না থাকে তাহলে পেয়ারা পাতা ব্যবহার করতে পারেন কারণ চিকিৎসকেরা বলেন চুলের জন্তে পেয়ারা পাতাও অনেক উপকার ভয়ে আনে। তাই আপনি চাইলে পেয়ারা পাতাও ব্যবহার করে দেখতে পারেন। এরপরেও যদি চুল পড়া বন্ধ না হয় তাহলে অবশ্যই একজন অবিগ্য ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিবেন। কারণ সব উপকরণ সবার ক্ষেত্রে নাও আসতে পারে।

বড়ই পাতার রস খাওয়ার নিয়ম

বড়ই পাতার রস খাওয়ার নিয়ম জানতে চান তাহলে ঠিক জায়গায় এসেছেন। আপনারা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছেন বড়ই পাতার বিভিন্ন উপকারী দিক নিয়ে। বড়ই পাতা ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন রোগ থেকে খুব সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়। এটি আমার কথা নয় অভিজ্ঞ পুষ্টিবিদরা এই কথা বলে থাকেন।কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা বড়ই পাতার রস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।

এর জন্য কয়েকটি পরিষ্কার বড়ই পাতা ব্লেন্ডারে কিংবা পাটায় পিসে নিন। তারপর ছাকনার সাহায্যে পাতা থেকে রস গুলো বের করে নিন। রস বের করা হয়ে গেলে আধা কাপ রস সংগ্রহ করুন এরপর সেই রসের মধ্যে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে খেয়ে ফেলুন। আবার আপনি চাইলে একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েও বড়ই পাতার রস খেতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় বরই খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় বরই খাওয়ার উপকারিতা, এতক্ষণে আমরা জানতে পেরেছি বরই পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। এখন আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব গর্ভাবস্থায় বরই খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। গর্ভকালীন সময়ে মায়েদের খাবারের দিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হয়।

কারণ গর্ভকালীন সময়ে মায়ের পুষ্টিকর খাবার খাওয়া খুবই জরুরি।পুষ্টিবিদরা বলেন গর্ভাবস্থায় মায়েরা যদি পুষ্টি হীনতায় ভোগেন তাহলে সেই সাথে তার পেটের সন্তানও পুষ্টিহীনতায় ভোগেন। তাই গর্ভাবস্থায় পেটের সন্তানের সুস্বাস্থ্যের জন্য নিয়মিত বারটি থেকে ১৫ টি করে বরই খেতে পারেন।
কারণ পুষ্টিবিদরা বলেন গর্ভাবস্থায় বরই খাওয়ার বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় বরই খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি?
  • গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখা খুবই জরুরী তাই আপনি যদি একজন ডায়াবেটিস রোগী হয়ে থাকেন তাহলে গর্ভাবস্থায় বরই খেতে পারেন এতে খুব সহজেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
  • গর্ভাবস্থায় মায়েদের শক্তির প্রয়োজন হয়। তাই পুষ্টিবিদরা বলেন অতিরিক্ত শক্তি বাড়ানোর জন্য গর্ভাবস্থায় বরই খাওয়া খুবই জরুরি।
  • অনেক মায়েদের ক্ষেত্রে দেখা যায় গর্ভাবস্থায় তাদের শরীর আগের তুলনায় অনেক অংশে বেড়ে যায় যার কারণে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই আপনারও যদি গর্ভাবস্থায় এই সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে বরই খেতে পারেন।
  • পুষ্টিবিদরা বলেন বরই এ প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, আয়রন ও ক্যালসিয়াম রয়েছে যা গর্ভাবস্থায় মায়েদের সুস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি।
  • বরই এ রয়েছে পলিস্যাকারাইডট যা কর্মকালীন সময়ে মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
  • গর্ভাবস্থায় অনেক সময় দেখা যায় পেট ফাঁপা, বমি বমি ভাব ও বদ হজমের মত নানান সমস্যা দেখা দেয়। চিকিৎসকেরা বলেন নিয়মিত ১০ থেকে ১২টি বরই খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • পুষ্টিবিদরা বলেন বরই এ প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকায় গর্ভাবস্থায় পেটের সন্তানের হাড় গঠন এবং হাড় মজবুত ও শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।

বরই পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা শেষ কথা

বরই পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা বলে শেষ করার মত নয়। পুষ্টিবিদদের মতে বরই পাতার যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি বেশ কয়েকটি অপকারিতাও রয়েছে যা উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। বরই পাতার সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে না জানলে এই অপকারিতা গুলো দেখা দিবে। তাই আমার দেওয়া সকল নিয়ম মেনে বরই পাতা ব্যবহার করতে পারেন।

সব চাইতে ভালো হবে আপনি যদি একজন অবিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেন তাহলে খুব সহজেই বরই পাতার সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে জানতে পারবেন। আজকের মত এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ্য থাকবেন এবং আমার লেখা আর্টিকেল গুলো ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মারিয়া অনলাইন ব্লকের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url