লটকনের ৩০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা - গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়ার উপকারিতা
কিডনি রোগী কি তরমুজ খেতে পারবে জানতে ক্লিক করুনআজকের আর্টিকেলের মূল টপিক হল লটকনের উপকারিতা ও অপকারিতা। আপনি যদি লটকন খেতে পছন্দ করেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আজকের আর্টিকেলের মধ্যে লটকনের বেশ কিছু কমন প্রশ্ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তাই আপনি যদি লটকনের উপরে সঠিক জ্ঞান লাভ করতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ৫ মিনিট সময় নিয়ে পড়ে দেখতে পারেন।
লটকনের উপকারিতা ও অপকারিতা |
পড়া শুরু করার আগে চলুন দেখে নেই এই পুরো আর্টিকেলে কি কি রয়েছে। যেমন লটকনের উপকারিতা ও অপকারিতা, গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়ার উপকারিতা, পুরুষ লটকন গাছ চেনার উপায়, লটকনের বিচি খেলে কি হয়, লটকন কিভাবে খায়, লটকনের পুষ্টিগুণ, লটকন চাষ পদ্ধতি ইত্যাদি বিষয়ে সঠিক ধারণা লাভ করতে পারেন।
সূচীপত্রঃ লটকনের ৩০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
লটকনের উপকারিতা ও অপকারিতা
লটকনের উপকারিতা ও অপকারিতা, লটকন এমন একটি ফল যা শুধুমাত্র বর্ষাকালে পাওয়া যায়। চিকিৎসকেরা বর্ষাকালে সুস্থ থাকার জন্য লটকন খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। লটকন ফল দেখতে অনেকটাই আঙ্গুরের মত এবং খেতে কিছুটা টক মিষ্টি হয়। লটকন ফল আকারে ছোট হলেও এর পুষ্টিগুণ অনেক বেশি বর্ষাকালে নিয়মিত লটকন খেলে নানা ধরনের রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এমনকি আপনার মুখের রুচি বাড়াতেও সাহায্য করবে। এছাড়া লটকন ফল বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন নামে পরিচিত লাভ করেছে যেমন বুগি, কানাইজু, হাড়ফাটা, ডুবি, লটকা বা লটকাউ, বুবি। আবার লটকন কে ইংরেজিতে বলা হয় (Burmese grape)। এই লটকন ফল ইন্দোনেশিয়া , মালয়েশিয়া এবং ভারতে সব চেয়ে বেশি
দেখা যায়। আবার আপনি লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন আমাদের দেশেও লটকন ফল প্রচুর চাষ করা হয়। লটকন ফল ঔষধি ফল নামে পরিচিত তাই চিকিৎসকেরা বর্ষাকালে সুস্থ থাকার জন্য লটকন ফল খেতে পরামর্শ দেয়। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক লটকন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
রক্তশূন্যতাঃ লটকনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। আমাদের শরীরের আয়রনের অভাবে রক্তশূন্যতা দেখা দেয় তাই রক্তশূন্যতা দূর করার জন্য নিয়মিত লটকন খেতে পারেন। লটকনে থাকা আয়রন আপনার শরীরের রক্তশূন্যতা পূরণ করতে সাহায্য করবে।
চর্মরোগঃ নিয়মিত লটকন খেলে চর্ম রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। চর্ম রোগের মধ্যে দেখা যায় খোসপাঁচড়া ও চুলকানি। এই সমস্যা থেকে খুব সহজে রেহাই পেতে লটকন বেটে শরীরে লাগিয়ে দিন।
হাড় মজবুতঃ লটকনে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং আয়রন রয়েছে যা আমাদের দেহের হাড় শক্তিশালী করতে সাহায্য করে এবং রক্ত পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
শক্তির উৎসঃ লটকন দেহের শক্তি জোগাতে সাহায্য করে। কারণ লটকনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং প্রোটিন। প্রতিদিন সকালবেলা তিন চারটা লটকন খেলে সারাদিন শরীর চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করবে।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ ক্যান্সার নেই কোন অ্যানসার। আপনার শরীরে যদি ক্যান্সারের আবির্ভাব দেখা যায় তাহলে আপনার ডায়েটে লটকন রাখতে পারেন। কারণ ক্যান্সার রোগ শুরু মাত্রই আপনি যদি লটকন খেতে পারেন তাহলে ক্যান্সারের হাত থেকে বাঁচাবে লটকন যা গবেষণায় প্রমাণিত।
দুর্বলতাঃ চিকিৎসকেরা দুর্বলতা কাটানোর জন্য পটাশিয়াম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। আপনি যদি লক্ষ্য করেন তাহলে দেখতে পাবেন লটকনে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে যা আপনার শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে। সেই সঙ্গে দুর্বলতা দূরে ঠেলে দিবে।
শর্করাঃ রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে লটকন। কারণ লটকনে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল এবং খনিজ যা আমাদের দেহের রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধঃ বর্ষাকালে আমাদের দেহে বিভিন্ন ধরনের রোগ বাসা বাঁধতে দেখা যায় তার মধ্যে রয়েছে জ্বর, সর্দি কাশি ইত্যাদি। বর্ষাকালে এই সমস্ত রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিয়মিত লটকন খেতে পারেন।
মুখে ঘাঃ অনেকের ভিটামিন সি এর অভাবে মুখে ঘন ঘন ঘা দেখা যায় আপনারও যদি এই সমস্যা থেকে থাকে তাহলে নিয়মিত লটকন খেতে পারেন। লটকনে থাকা ভিটামিন সি আপনার মুখের ঘা দূর করবে অল্প দিনে।
ত্বক ফাটাঃ আমাদের ত্বকে অনেক সময় রুক্ষতা দেখা দেয় যার কারণে আমাদের ত্বক ফেটে যায়। এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে নিয়মিত লটকন খেতে পারেন কারণ চিকিৎসকেরা বলেন নিয়মিত লটকন খেলে শরীরের ত্বক উজ্জ্বল থাকে।
মানসিক চাপঃ লটকন মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। আপনার যদি মানসিক চাপ কিংবা বমি বমি ভাব, পেটের ক্ষুধা ইত্যাদি সমস্যা থেকে থাকে তাহলে নিয়মিত লটকন খেতে পারেন। তাহলে দেখবেন অল্প দিনে সব রোগ দূরে চলে যাবে।
এছাড়া আরো অনেক রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে লটকন। তাই পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য বর্ষার সিজনে পর্যাপ্ত লটকন খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
লটকন ফলের অপকারিতা
গবেষণায় দেখা যায় লটকনে তেমন কোনো অপকারিতা দেখা যায় না। কিন্তু চিকিৎসকেরা বলে থাকেন আপনি যদি অতিরিক্ত মাত্রায় লটকন খেতে থাকেন সেক্ষেত্রে দুই একটা অপকারিতা দেখা দিতে পারে। আবার বলেন আপনি যদি নিয়মিত তিন থেকে চারটি করে
আরো পড়ুনঃ ওজন কমাতে ওটস খাওয়ার নিয়ম
লটকন খেতে পারেন সে ক্ষেত্রে অপকারিতার চেয়ে উপকারিতা বেশি পাবেন এবং নিজেকে ফিট রাখতে সাহায্য করবে। তাই লটকন অতিরিক্ত না খেয়ে পরিমাণমতো খেতে থাকেন এতে বিশেষ উপকার পাবেন।
গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়ার উপকারিতা, গর্ভাবস্থায় লটকন খেতে অনেকেই ভয় পায় কিন্তু আপনি কি জানেন গর্ভাবস্থায় লটকন খেলে কি হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন গর্ভাবস্থায় লটকন খেলে বেশ কিছু উপকারিতা পাওয়া যায়।
গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়ার উপকারিতা |
তাই আপনি যদি গর্ভাবস্থায় শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে চান তাহলে অবশ্যই দিনে তিন-চারটি করে লটকন খেতে পারেন।
- গর্ভাবস্থায় মায়েদের অতিরিক্ত ক্যালরির প্রয়োজন হয়। লটকনে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি দেখা যায় তাই গরবস্থায় অতিরিক্ত ক্যালরি যোগ করার জন্য প্রতিদিন তিন-চারটি করে লটকন খেতে পারেন। এতে আপনার দেহে শক্তি সঞ্চালিত হবে।
- গর্ভাবস্থায় মায়েদের বিভিন্ন ধরনের রোগ আক্রমণ করতে পারে। তাই চিকিৎসকেরা বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পেতে গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। কারণ লটকনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- গর্ভাবস্থায় মায়েদের বেশি বেশি বমি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই গর্ভাবস্থায় বমি থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত লটকন খেতে পারেন। কারণ বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত নিয়মিত লটকন খেলে বমি বমি ভাব দূরে সরে যায়।
- গর্ভাবস্থায় মায়েদের দেহে শক্তি জোগাতে চিকিৎসকেরা নিয়মিত লটকন খেতে পরামর্শ দিয়ে থাকে। কারণ লটকনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, চর্বি, লৌহ এবং খনিজ পদার্থ যা আমাদের মানসিক এবং শারীরিকভাবে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- গর্ভাবস্থায় মায়েদের কোন কিছুই খেতে ইচ্ছে করে না এরপরেও নিজের জন্য এবং বাচ্চাকে সুস্থ রাখার জন্য অনেক মায়েরা জোর করে খেয়ে থাকে। কিন্তু গবেষণায় প্রমাণিত আপনি যদি গর্ভাবস্থায় নিয়মিত দুই তিনটা করে লটকন খেতে পারেন তাহলে দেখবেন আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং মুখের রুচি ফিরে আসবে।
- গর্ভাবস্থায় মায়েদের আয়রন গ্রহণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।কারণ আপনি যদি গর্ভাবস্থায় ঠিকমতো আয়রন গ্রহণ না করতে পারেন তাহলে বাচ্চা প্রসবের সময় ঝুঁকি হতে পারে। তাই চিকিৎসকেরা গর্ভবস্থায় পর্যাপ্ত আয়রন গ্রহণ করার জন্য লটকন খেতে পরামর্শ দিয়ে থাকে।
- গর্ভস্থায় মায়েদের তৃষ্ণা অনেক অংশে বেড়ে যায়। তাই চিকিৎসকেরা গর্বস্থায় তৃষ্ণা নিরাময় করতে নিয়মিত দুই তিনটা করে লটকন খেতে পরামর্শ দিয়ে থাকে। কারণ লটকনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জলীয় যা গর্ভাবস্থায় মায়ের তৃষ্ণা মেটাতে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়ার অপকারিতা
গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়ার অপকারিতা নেই বললেই চলে কারণ বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত লটকনে কোনো ধরনের অপকারিতা নেই কিন্তু আপনি যদি পরিমাণের চেয়ে অতিরিক্ত খেতে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই একজন
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় ওটস খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভবতী মহিলা প্রতিদিন তিন থেকে চারটি করে লটকন খেতে পারে এতে কোন ধরনের সমস্যা হবে না। আশা করি বুঝতে পেরেছেন গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
পুরুষ লটকন গাছ চেনার উপায়
পুরুষ লটকন গাছ চেনার উপায়, আমরা অনেকেই শখের বসে লটকন গাছ রোপন করে ফল খেতে চাই। কিন্তু তিন চার বছর পর দেখা যায় সেই লটকন গাছ থেকে কোন ধরনের ফল হচ্ছে না এর কারণ হচ্ছে এই গাছটি পুরুষ লটকন গাছ যার কারণে ফল হয় না। তাই লটকন গাছ রোপন করার আগে অবশ্যই লটকন গাছ পুরুষ নাকি স্ত্রী সে সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।
আরো পড়ুনঃ ফেরাউন কি তরমুজের ব্যবসা করতো
না হলে লটকন গাছ রোপন করার পরে ফল খেতে পারবেন না। কারণ পুরুষ লটকন গাছে ফল হয় না। পুরুষ এবং স্ত্রী লটকন গাছ চেনার উপায় খুবই সহজ যেমন পুরুষ লটকন গাছে যখন ফুল আসে তখন দেখবেন ফুলগুলো হলুদ রঙের এবং কয়েক দিনের ভেতরে ঝরতে শুরু করে।
আরো পড়ুনঃ মিষ্টি আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা
কিন্তু স্ত্রী লটকন গাছের ফুল একটু বড় হয় এবং বড় বড় গুটি আকারে দেখা যায় এটা দেখেই সহজেই পুরুষ লটকন গাছ চিনতে পারবেন। এছাড়াও আপনি যখন লটকন গাছ কিনতে যাবেন কিংবা চারা কিনতে যাবেন তখন একজন বিশ্বাসী ব্যবসায়ীর কাছ থেকে গাছ সংরক্ষণ করতে পারেন।
লটকনের বিচি খেলে কি হয়
লটকনের বিচি খেলে কি হয়, আমরা অনেকেই মনে করি লটকনের বিচি খেলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ বাসা বাঁধতে শুরু করে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন লটকনে যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনিভাবে লটকনের বিচি খেলে বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ কোন ফল খেলে মানুষ ফর্সা হয়
আবার অনেকে লটকনের বিচি ঔষধি নামের চিনে থাকে কারণ লটকনের বিচি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময় করা যায়। এর মধ্যে অন্যতম একটি হলো প্রতিষেধক হিসাবে কাজ করে গনোরিয়া রোগের জন্য খুবই কার্যকরী লটকনের বিচি। আবার অনেকেই লটকনের বিচি ভেজে খেতে পছন্দ করে।
আরো পড়ুনঃ পানি খেলে কি ত্বক ফর্সা হয়
লটকনের বিচি আপনি যেভাবেই খান না কেন এর উপকারিতা পেয়ে যাবেন এতে কোন ধরনের সন্দেহ নেই। তাই আপনি চাইলে লটকন ফলের পাশাপাশি লটকন ফলের বিচি খেতে পারেন।
লটকন কিভাবে খায়
লটকন কিভাবে খায়, লটকন ফল পছন্দ করে না এমন মানুষ নেই বললেই চলে। কারণ আমরা কম বেশি সবাই লটকন ফল খেতে পছন্দ করি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা এই লটকন ফল কিভাবে এবং কত উপায়ে খাওয়া যায়। লটকন ফল আপনি বিভিন্ন উপায়ে খেতে পারেন যেমন আমরা অনেকেই লটকন ফলের খোসা ছাড়িয়ে দানাগুলো খেতে পছন্দ করি।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়া যাবে কিনা
আবার অনেকেই জ্যাম তৈরি করে খেতে বেশি পছন্দ করে। আবার অনেকেই দেখা যায় লটকন ফলের আচার তৈরি করে সারা বছর খেয়ে থাকে। আপনি চাইলে লটকন ফলের আচার তৈরি করে খেতে পারেন। লটকনের ফল মরিচ এবং লবণ দিয়ে সুন্দর করে তৈরি করে খেতে পারেন এছাড়া আপনি চাইলে লটকনের বিচ খেতে পারেন।
লটকনের পুষ্টিগুণ
লটকনের পুষ্টিগুণ, প্রতি ১০০ গ্রাম লটকন ফলের পুষ্টিগুণ নিচে তুলে ধরা হলোঃ
- প্রোটিনঃ ০.৪৫ গ্রাম
- চর্বিঃ ০.২ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেটঃ ৮.৫ গ্রাম
- ক্যালসিয়ামঃ ৯ মিলিগ্রাম
- ফসফরাসঃ ৩০ মিলিগ্রাম
- লৌহঃ ৫.৩৪ মিলিগ্রাম
- পটাশিয়ামঃ ১৭০ মিলিগ্রাম
- ম্যাগনেসিয়ামঃ ১৮ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন সিঃ ৬০-৯০ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন বি১ঃ ০.০৩ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন বি২ঃ ০.১৯ মিলিগ্রাম
- ফাইবারঃ ০.৯ গ্রাম
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্টঃ ২০-৩০%
- জলঃ ৮০-৯০%
লটকন চাষ পদ্ধতি
লটকন চাষ পদ্ধতি, লটকন একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল। বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় লটকন চাষ করা হয়। তাই আপনিও যদি ভেবে থাকেন লটকন চাষ করে স্বাবলম্বী হবেন তাহলে এই আর্টিকেলটি পড়া শুরু করুন। আমাদের সমাজে অনেকেই লটকন চাষ করে লাভবান হচ্ছে কারণ লটকন চাষ করতে তেমন টাকা পয়সা খরচ হয় না।
এবং বিক্রি করার সময় এর দাম টাও বেশ ভালো পাওয়া যায় কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন হবে সঠিক পদ্ধতিতে লটকন চাষ করা। যা আমরা আপনাদের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বোঝানোর চেষ্টা করব।
মাটিঃ লটকন উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমিতে ভালো জন্মে। বেলে দো-আঁশ মাটি লটকন চাষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। মাটিতে যেন পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকে। আবার অনেকেই মনে করতে পারেন জমিতে যদি কোনো ধরনের সূর্যের আলো না আসে তাহলে কি লটকন গাছ জন্মাবে এর উত্তর হল হ্যাঁ এতে কোন ধরনের সমস্যা হবে না।
আরো পড়ুনঃ আমড়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
জাতঃ লটকনের বিভিন্ন জাত রয়েছে, যেমনঃ ১. বারী লটকন ২. লোকাল লটকন ইত্যাদি। আপনাকে অবশ্যই একটি ভালো জাতের লটকন গাছ ক্রয় করতে হবে কারণ উন্নত জাতের লটকন গাছ বেশি ফলন দেয়।
চারাঃ লটকন বীজ থেকে চারা তৈরি করা যায়। বীজ বপনের জন্য বর্ষার শুরুতে (জুন-জুলাই) ভালো সময় বলে মনে করে বিশেষজ্ঞরা। বীজ বপন করে ১ মাসের মধ্যে চারা গজাতে শুরু করে। চারা গজানোর পর ১৫-২০ দিন পর চারা রোপণ করা যায়।
রোপণঃ সারি থেকে সারির দূরত্ব ৬ মিটার এবং চারা থেকে চারার দূরত্ব ৬ মিটার হওয়া উচিত।৯০ সেমি গর্ত করে গর্তের মাটিতে গোবর, টিএসপি এবং এমপি সার মিশিয়ে ভরাট করতে হবে।গর্ত ভর্তি করার পর পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিতে হবে। গর্তের মাঝখানে চারা সোজাভাবে লাগিয়ে চারদিকে মাটি দিয়ে চেপে দিতে হবে। এবং চারা লাগানোর পর পর পানি দিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চার চুল ঘন হয়
পরিচর্যাঃ নিয়মিত পানি দিতে হবে, গাছের গোড়ায় আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।
সার প্রয়োগঃ প্রতি বছর পূর্ণবয়স্ক গাছে ৫-১০ কেজি গোবর, ২৫০ গ্রাম টিএসপি এবং ১২৫ গ্রাম এমপি সার প্রয়োগ করতে হবে। সার গাছের গোড়ায় প্রয়োগ করে মাটি দিয়ে চেপে দিতে হবে।
রোগ ও পোকামাকড়ঃ লটকনে বিভিন্ন রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ হতে পারে। রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ দেখা দিলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় গ্রাহক আসসালামু আলাইকুম আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আজকের পোস্টের মূল বিষয় হলো লটকনের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। লটকন এমন একটি ফল যা দেখা মাত্রই জিভে জল চলে আসে কারণ এই ফল যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিগুণে ভরা। আপনি যদি এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে লটকনের কি কি উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে সেসব বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন।
গর্ভবতী মায়েদের জন্য লটকন খাওয়া খুবই উপকারী কারণ একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে গর্ভাবস্থায় লটকন খেলে পেটের বাচ্চা এবং মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। এর সাথে মা ও পেটের বাচ্চা সুস্থ ও সরল থাকে এছাড়াও গর্ভাবস্থায় লটকন খেলে পেটের বাচ্চার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে অন্যরকম ভূমিকা পালন করে। গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়ার আরো বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে।
মারিয়া অনলাইন ব্লকের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url