কাসার প্লেটে খাওয়ার উপকারিতা - কাসা কত টাকা কেজি 2024
বর্তমান সময়ে কাঁসার ব্যবহার নেই বললেই চলে কারণ আমরা অনেকেই জানিনা কাঁসার প্লেটে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। আপনি যদি কাঁসার প্লেটে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে না জেনে থাকে তাহলে আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে নিতে পারেন। কাঁসার বাসন, প্লেট, থালা দিন দিন উঠিয়ে নেওয়া হচ্ছে এর মূল কারণ হলো কাঁসার মূল্য আগের থেকে
কাসার প্লেটে খাওয়ার উপকারিতা |
বর্তমানে অনেক অংশে বেড়ে গেছে যা অনেকের ক্ষেত্রে কেনা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময় করার জন্য চিকিৎসকেরা অনেক সময় কাঁসার প্লেটে খাবার খেতে বলে। কারণ কাঁসার প্লেটে নিয়মিত খাবার খেলে কিংবা পানি পান করলে দেহের বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। তাই পুষ্টিবিদরা বয়স্কদের কাঁসার প্লেটে খাবার বা পানি পান করতে বলে।
সূচিপত্রঃ কাসার প্লেটে খাওয়ার উপকারিতা
কাসার প্লেটে খাওয়ার উপকারিতা
কাসার প্লেটে খাওয়ার উপকারিতা, কাসার প্লেটে বা পাত্রে খাওয়ার বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। জল খাবার খাওয়ার জন্য কাসার প্লেট বা পাত্র সব চেয়ে ভালো মনে করেন পুষ্টিবিদ্যা।প্রাচীনকালের বেশিরভাগ মানুষই কাঁসার প্লেটে বা পাত্রে খাবার খেতে পছন্দ করতেন। কিন্তু বর্তমানে কাসার প্লেট বা পাত্র নেই বললেই চলে।
তাই আপনি যদি লক্ষ্য করেন তাহলে বুঝতে পারবেন আগের তুলনায় বর্তমানে রোগ বালাই অনেক অংশে বেড়ে গেছে। এর কারণ হলো আমরা প্রতিনিয়ত প্লাস্টিক কিংবা স্টিলের প্লেটে বা পাত্রে খাবার খেয়ে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। যার কারণে আমাদের শরীরে রোগ বালাই দেখা যায়। কারণ বর্তমানে স্টিলের যে সমস্ত খাবার পাত্র বা প্লেট দেখা যায়
সেসব বেশির ভাগ পাত্রের উপর দেখা যায় ক্রমিয়াম ও নিকেলের প্রলেপ যা আমাদের দেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। কিন্তু ক্রমিয়াম শরীরের অল্প পরিমাণে গেলে তেমন কোন সমস্যা দেখা যায় না। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কাসার প্লেটে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।
পাকস্থলীঃ গবেষণায় প্রমাণিত কাসার প্লেটে বা পাত্রে খাবার খেলে দেহের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া মারা যেতে শুরু করে।
কলেরাঃ কাসার জগে বা পানির পাত্রে নিয়মিত পানি খেতে পারলে কলেরা ছাড়াও পেট খারাপ বা ডায়রিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
কিডনিঃ নিয়মিত কাসার গ্লাসে পানি পান করলে দেহে থাকা ক্ষতিকর পদার্থ বেরিয়ে যায়। এছাড়াও কিডনি ও লিভারের কার্য ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
সুন্দর ত্বকঃ নিয়মিত কাসার প্লেটে খাবার খেলে মেলানিনের তার কার্য ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। যার ফলে আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং কোমলতা বজায় থাকে।
তামাঃ আপনার শরীরে যদি তা আমার ঘাটি থেকে থাকে তাহলে কাঁসার প্লেটে পাত্রে নিয়মিত খাবার খেতে পারেন। কারণ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন নিয়মিত কাসার প্লেটে খাবার খেলে তামার ঘাটতি পূরণ করে এর সাথে মস্তিষ্কের থাকা নিউরনের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
আয়রনঃ প্রতিদিন রাতে কাসার গ্লাসে পানি রেখে সকালে খেলে দেহের তামা ও কপাল দ্রুত বাড়তে শুরু করে। দেহে তামা ও কপার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে শরীরের কোষ কার্য ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও আয়রনের শোষণ কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
ওজন নিয়ন্ত্রণঃ আপনি যদি নিয়মিত কাসার প্লটে খাবার খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমতে শুরু করবে যার ফলে শরীরের চর্বি নিমিষেই শেষ হয়ে যাবে এর ফলে শরীর নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
ব্যথাঃ যাদের শরীরে জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা করে তাদেরকে পুষ্টিবিদরা কাঁসার প্লেটে খাবার খেতে বলে। কারণ কাঁসায় রয়েছে তামা যা শরীরের রক্ত চলাচলে সাহায্য করে।
হজমশক্তিঃ যাদের হজমে সমস্যা রয়েছে তাদের নিয়মিত কাঁসার প্লেটে কিংবা পাত্রে খাবার খাওয়া উচিত। কারণ কাসায় রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল যা পেটের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে সাথে সাথে মেরে ফেলতে সাহায্য করে। যার কারণে বদহজম, গ্যাস্ট্রিক, আলসার, পেটের সমস্ত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাঃ আমেরিকায় একটি গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত কাসার প্লেটে খাবার খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় যেমন উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টরল, হার্ট অ্যাটাক, মস্তিষ্কের কোষ গঠনে, ক্ষত নিরাময়, বাতের ব্যথা, রক্তচাপ ইত্যাদি রোগ নিরাময় করতে সাহায্য করে।
কাসার যেমন বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে তেমনি কয়েকটি অপকারিতাও রয়েছে। কারণ কাঁসার মধ্যে রয়েছে 78 শতাংশ তামা এবং ২২ শতাংশ টিন এই দুটি ধাতু একত্রিত করে তৈরি করা হয়েছে কাসা। আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন কাসার প্লেটে বা পাত্রে টক জাতীয় খাবার, লবণ এবং লেবু খাওয়া ঝুঁকি রয়েছে।
এছাড়াও পুষ্টি কিরা জানিয়েছেন প্লাস্টিকের প্লেটে বা পাত্র ব্যবহার করলে স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন কাসার পাত্রে কোন ধরনের ঝুঁকি নেই। তাই আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য খাবার এবং পানি রাখার জন্য কাঁসা ব্যবহার করতে পারেন নিশ্চিন্তে।
কাঁসার বাসন বিখ্যাত কোথায়
কাঁসার বাসন বিখ্যাত কোথায়, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এখনো কাঁসার বাসন দেখা যায়। কিন্তু বর্তমানে কাঁসার বাসন সেরকম বিখ্যাত নয় কারণ আমাদের চারপাশে মেলামাইন, কাচের প্লেট, প্লাস্টিকের প্লেট, স্টিলের প্লেট ইত্যাদি বাসন এবং পাত্র গুলো খুব অল্প দামে ক্রয় করা যায়।অন্যদিকে আপনি যদি একটি কাঁসার বাসন কিংবা পাত্র কিনতে চান
আরো পড়ুনঃ মধু খাওয়ার উপকারিতা
সেক্ষেত্রে গুনতে হয় অনেক টাকা। যার কারণে আমরা অনেকেই কাসার বাসন ছেড়ে স্টিল এবং মেলামাইনের পাত্রে খাবার খাওয়া শুরু করেছি। কিন্তু আপনি যদি লক্ষ করেন তাহলে দেখতে পাবেন বাংলাদেশে নাটোর জেলায় এখনো প্রচুর কাঁসার বাসন তৈরি হয় এবং বিক্রি হয়। নাটোর ছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এখনো কাঁসার বাসনে খাবার খেতে দেখা যায়।
কারণ কাঁসার বাসনে বা পাত্রে খাবার খাওয়ার অনেকগুলো উপকারিতা রয়েছে যা উপরে ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। বর্তমান সময়ে কাঁসার বাসন সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ভারতবর্ষে কারণ হিন্দুদের পূজা শুরু হলে কাসার বাসন দিয়ে মেহমানদের আপ্যায়ন করে থাকে। যার কারণে ভারতবর্ষে এখনো কাঁসার বাসন বিখ্যাত রয়েছে।
কাসা কত টাকা কেজি
কাসা কত টাকা কেজি, বাংলাদেশ থেকে কাসা শিল্প আস্তে আস্তে কমতে শুরু করেছে। যার মূল কারণ হলো কাঁসার দাম বেড়ে যাওয়া। কিন্তু আমরা অনেকেই পূর্বের ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য কাঁসা ব্যবহার করে থাকি। কাঁসা কত টাকা কেজি এটি নির্ভর করছে আপনি কোন অঞ্চলে বসবাস করছেন। কারণ একাক অঞ্চলে এক এক রকম দাম হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশে্র বাজারে কিংবা দোকানে বর্তমান
আরো পড়ুনঃ ১ মাস থেকে ৯ মাস শিশুর খাবার
কাসার দাম প্রতি কেজি ২৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। আবার কিছু কিছু কাঁসা রয়েছে যেগুলোর দাম ২০০০ থেকে ২২০০ টাকার মধ্যে। কিছু কাঁসা রয়েছে যেগুলো ওজনে অনেক ভারী হয়ে থাকে তার দামও একটু বেশি হয়ে থাকে। আবার অনেক কাসা দেখা যায় ওজনে অনেক হালকা সেগুলোর দাম একটু কম হয়ে থাকে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন কাসা কত টাকা কেজি হতে পারে।
কাঁসার থালার দাম কত
কাঁসার থালার দাম কত, আমাদেরকে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য চিকিৎসকেরা অনেক সময় কাসার থালায় খাবার খেতে বলেন। কিন্তু আমরা অনেকেই কাসার থালার দাম সম্পর্কে জানিনা। একটি কাসার থালার দাম কত হবে এটি নির্ভর করছে সেই থালার ওজন কতটুকু তার উপর। কারণ কাঁসার খালা কিংবা জিনিসপত্র কেজি হিসাবে বিক্রি করা হয়।
আরো পড়ুনঃ আমড়া পাতার উপকারিতা
কিন্তু বর্তমান বাজারে কিছু দোকানে ১ কেজি কাসার থালার দাম ২২০০ থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে। কিন্তু আপনি যদি দুই তিন কেজি ওজনের কাঁসার প্লেট কিংবা থালা কিনতে চান সেক্ষেত্রে দাম পড়বে ৪০০০ থেকে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত। এই দাম বিভিন্ন অঞ্চল এবং বিভিন্ন দোকান বেঁধে কম বেশি হতে পারে।
কাঁসা ও পিতলের পার্থক্য
কাঁসা ও পিতলের পার্থক্য, কাসা কি দিয়ে তৈরি হয় আমরা অনেকেই কাসা ও পিতল একই বলে চিনে থাকি কিন্তু এটি সম্পূর্ণভুল ধারণা। কারণ কাঁসা এবং পিতলের উপাদানগত পরিবর্তন রয়েছে। যেমন কাসায় রয়েছে ৮০% তামা এবং ২০% টিন। কিন্তু অন্যদিকে পিতলে রয়েছে ৬০% তামা এবং ৪০% জিংক বা দস্তা। কাঁসার আসবাবপত্র তৈরি করা অনেক কষ্টসাধ্য কারণ কাঁসা কে প্রথমে অধিক তাপ দিয়ে গলাতে হয়।
আরো পড়ুনঃ আমড়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
এরপর কারিগর দ্বারা আসবাবপত্র বা প্লেট, থালা, ঘড়ি, টেবিল, ঝাড়বাতি ইত্যাদি তৈরি করতে সক্ষম হয় যা অনেক কষ্টসাধ্য। কিন্তু অন্যদিকে পিতলের আসবাবপত্র তৈরি করতে তেমন কোন কষ্ট হয় না। কারণ এই পিতল খুব সহজেই গলানো যায়। কাঁসার মত পিতল দিয়েও বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্র থালাবাসন তৈরি করা যায়। কাঁসা এবং পিতল একই রকম দেখা গেলেও এর অনেক ভিন্নতা রয়েছে।
কাসা ও পিতল চেনার উপায়
কাসা ও পিতল চেনার উপায়, আমরা যারা কাসার প্লেটে খাবার খেতে পছন্দ করি তারা অনেকেই কাসার প্লেট কিনতে নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়। কারণ কাঁসা ও পিতল দেখতে অনেকটাই একই রকম হয়ে থাকে যার জন্য আমরা অনেকেই গুলিয়ে ফেলি। কাঁসা ও পিতল চেনার সহজ উপায় সম্পর্কে আজকের আর্টিকেল থেকে জেনে নিন।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় আতা ফল খাওয়ার উপকারিতা
আসল কাঁসা চেনার বেশ কিছু উপায় রয়েছে যেমন আপনি যদি কাঁসার প্লেটে চামচ দ্বারা আঘাত করেন তাহলে দেখবেন কাসার প্লেট অনেকক্ষণ যাবত বাঁচতে শুরু করবে। এছাড়াও কাঁসার প্লেট বা আসবাবপত্র দেখতে একটু লালচে রঙের হয়। কিন্তু অপরদিকে পিতল দেখতে অনেকটাই সোনালী কালারের মত হয় এবং চকচকে হয়।
আরো পড়ুনঃ আতা ফলের পাতার উপকারিতা
আপনি যদি পিতলে কাঁসার মত চামচ দিয়ে আঘাত করেন তাহলে দেখবেন শব্দ হবে কিন্তু সেই শব্দটি অল্প সময়ে বন্ধ হয়ে যাবে। আবার পিতল কাঁসার চেয়ে অনেক হালকা হয়ে থাকে। আপনি যদি এই সমস্ত বিষয়গুলো ফলো করেন তাহলে খুব সহজেই বুঝতে পারবেন কোনটি কাসা এবং কোনটি পিতল।
কাসার প্লেটে খাওয়ার উপকারিতার শেষ কথা
কাসার প্লেটে খাওয়ার উপকারিতা জেনে আমরা অনেকেই কাসার প্লেটে খাবার খাওয়ার চিন্তাভাবনা করেছি। কিন্তু এর মধ্যে যারা ইসলাম ধর্মীয় মানুষ রয়েছে তাদের মধ্যে অনেকেই বলে থাকেন যে কাঁসার প্লেট শুধুমাত্র বিধর্মী বা হিন্দুরা ব্যবহার করে। কাসার প্লেটে ইসলামের দৃষ্টিতে খাবার খাওয়া যাবেনা অনেকেই মনে করেন। কিন্তু আমাদের বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন
শুধুমাত্র দুইটি প্লেটে খাবার খাওয়া যাবেনা এক হল সোনার প্লেটে এবং অন্যটি হলো রুপার প্লেটে। কিন্তু বিশ্বনবী বলেছেন তোমরা যারা জান্নাতে প্রবেশ করবে তাদেরকে খাবার দেওয়া হবে সোনা এবং রুপার প্লেটে। কিন্তু আপনি যদি লক্ষ্য করেন তাহলে দেখতে পাবেন অনেক মুসলিম পরিবারে কাসার প্লেটে খাবার দাবার থেকে শুরু করে পানি পর্যন্ত এমনকি হাড়ি পাতিল সবকিছু কাঁসার পাত্রে করে থাকে।
মারিয়া অনলাইন ব্লকের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url