মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার খরচ - বেতন কত ও ছুটি কেমন
আপনি যদি একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। আপনার যদি মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার খরচ সম্পর্কে ধারণা না থাকে তাহলে আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়া শুরু করতে পারেন। কারণ আজকের আর্টিকেলে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার এর
মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার খরচ |
সমস্ত বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তাই আপনি যদি মেরিন ইঞ্জিনিয়ার সম্পর্কে সঠিক ধারণা লাভ করতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়া শুরু করুন এবং সঠিক ধারণা লাভ করুন।
সূচীপত্রঃ মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার খরচ
মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার খরচ
মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার খরচ, এটি নির্ভর করছে বিভিন্ন একাডেমি এবং ইউনিভার্সিটির উপর। কারণ আপনি যদি সরকারি ভাবে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চান সে ক্ষেত্রে খরচটা অনেক কমে আসবে এবং বেসরকারিভাবে করলে খরচ অনেক অংশে বেড়ে যাবে। আপনি যদি সরকারি ভাবে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চান সেক্ষেত্রে এক লাখ টাকার মত খরচ হতে পারে।
আবার এই খরচটা বিভিন্ন কারণে কম-বেশিও হতে পারে। কিন্তু আপনি যদি বেসরকারিভাবে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চান সে ক্ষেত্রে খরচ অনেক অংশে বেড়ে যাবে।বাংলাদেশে বেশ কিছু বেসরকারি মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি রয়েছে। আপনি চাইলে বেসরকারিভাবে 15 থেকে 20 লাখ টাকা খরচ করে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শেষ করতে পারেন।
আবার কিছু কিছু বেসরকারি মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি রয়েছে সেখান থেকে ৫-৬ লাখ টাকায় খুব সহজেই মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে পারেন। আসলে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার খরচ কত হতে পারে এটি নির্ভর করছে আপনি কোন মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটিতে পড়তে চান তার উপর।
মেরিন ইঞ্জিনিয়ার এর কাজ কি
মেরিন ইঞ্জিনিয়ার এর কাজ কি, একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ারকে একটি জাহাজের সমগ্র যাত্রা সাফল্যের সাথে সমাপ্ত করতে হয়। এ ক্ষেত্রে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারের সাধারণত দুই ধরনের কাজ রয়েছে। যেমনঃ
- নটিক্যাল বা ডেক
- ইঞ্জিন
আবার অনেক সময় এ দুটি বিভাগ ছাড়াও বন্দরের বিভিন্ন ধরনের কাজ করা লাগতে পারে।নিয়োগের কথা বললে বলা যায় এখানে দুই ধরনের জাহাজ পাওয়া যায় একটি হল বিদেশি আরেকটি হল দেশী।আপনি যদি বিদেশি জাহাজে কাজ করতে চান সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়াতে পারবেন এর সাথে মোটা অংকের ইনকামও করতে পারবেন।
কিন্তু আপনি যদি দেশি জাহাজে কাজ করেন সে ক্ষেত্রে ইনকামের সুযোগটা বিদেশি জাহাজের থেকে অনেক অংশে কমে আসবে এবং দেশ-বিদেশ ভ্রমণ করতে পারবেন না। এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে নটিক্যাল এবং ইঞ্জিন বিভাগের মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মূলত কি কি কাজ করে থাকে তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
নটিক্যাল বা ডেকঃ এর মানে হলো আপনার জাহাজটি ঠিকমতো যাচ্ছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখা। এবং কোন দিকে গেলে রাস্তা শর্টকাট হবে, অণ্য জাহাজ কোন দিকে যাচ্ছে ইত্যাদি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। এক কথায় বলতে গেলে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়ার পথে যে সমস্ত বাধা বিপত্তি আসবে সমস্ত বাধা পেরিয়ে জাহাজটি সঠিক সময়ে এবং সঠিক স্থানে নিয়ে যেতে হবে।
ইঞ্জিনঃ জাহাজের যে সমস্ত ইঞ্জিন রয়েছে সেই সমস্ত ইঞ্জিন ঠিকমতো কাজ করছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এছাড়া সমুদ্রের মধ্যে যদি ইঞ্জিনের কোন ধরনের সমস্যা হয় সেই সমস্যা গুলো খুব দ্রুত নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা। এক কথায় বলতে গেলে ইঞ্জিনের যদি কোন ধরনের সমস্যা হয় সেই সমস্যাটি উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে ঠিক করতে হবে।
মেরিন ইঞ্জিনিয়ার এর বেতন কত
মেরিন ইঞ্জিনিয়ার এর বেতন কত, একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার এর বেতন কত হবে এটি নির্ভর করছে সেই প্রতিষ্ঠানের উপর। কিন্তু আপনি যদি শুরুতেই বিদেশি কোন প্রতিষ্ঠানে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিয়োগ পেয়ে থাকেন সে ক্ষেত্রে প্রথম মাসে ২৫০ থেকে ৮০০ ডলার পর্যন্ত বেতন পেতে পারেন। এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হলে সাড়ে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত বেতন পেতে পারেন।
আবার আপনি যদি দেশি কোন প্রতিষ্ঠানে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিয়োগ পেয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে প্রতিমাসে 200 থেকে 300 ডলার পর্যন্ত বেতন পেতে পারেন যা বাংলাদেশী টাকায় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু আপনি যদি দ্রুত পদন্নতি করতে পারেন সে ক্ষেত্রে ৩০০০০ থেকে আড়াই লাখ টাকা ইনকাম করতে পারেন. এর জন্য আপনাকে অবশ্যই অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে।
মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং কি সরকারি চাকরি
মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং কি সরকারি চাকরি, আমরা অনেকেই নিজের ক্যারিয়ার গড়ার জন্য মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার আগ্রহ পোষণ করি। কারণ মেরিন ইঞ্জিনিয়ার দেশ-বিদেশ ঘুরতে পারে এর সাথে মোটা অংকের টাকাও ইনকাম করতে পারে। কিন্তু আপনি কি জানেন মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং সরকারি চাকরি নাকি বেসরকারি চাকরি।
মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং চাকরি হল একটি বেসরকারি চাকরি। এই চাকরি নির্দিষ্ট মেয়াদে হয়ে থাকে মেয়াদ শেষ হলে আপনি আবার অন্য জাহাজে চাকরি করতে পারেন। মানে আপনি যদি একটি জাহাজে ছয় মাসের মেয়াদে চাকরি করেন তাহলে ছয় মাস পর আপনার চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে এবং আপনাকে অন্য জাহাজে চাকরি খুঁজতে হবে।
মেরিন ইঞ্জিনিয়ারদের প্রথমে চাকরি পেতে একটু সময় লাগতে পারে কিন্তু আপনি যদি একটি জাহাজে ৬ মাস থেকে ১ বছর চাকরি করেন তাহলে পরবর্তীতে খুব সহজেই অন্য জাহাজে চাকরি পেয়ে যাবেন।
মেরিন ইঞ্জিনিয়ারদের ছুটি
মেরিন ইঞ্জিনিয়ারদের ছুটি, আমরা যারা মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য আগ্রহী তাদের মাথায় একটি কথাই ঘুরপাক খায় সেটি হল মেরিন ইঞ্জিনিয়ারদের ছুটি কেমন। এটি নির্ভর করছে আপনি কোন প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। আপনি যদি দেশি প্রতিষ্ঠানে কাজ করে থাকেন সেক্ষেত্রে খুব সহজেই মেরিন ইঞ্জিনিয়ার ছুটি নিতে পারে। কিন্তু আপনি যদি বিদেশি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন
সেক্ষেত্রে ছুটি নিতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় পড়তে পারেন। কারণ বিদেশী জাহাজ যখন এক দেশ থেকে অন্য দেশে রওনা হয় সেখানে প্রায় ৬ থেকে ৯ মাস সময় লেগে যায় এর মধ্যে আপনি চাইলেও কোন ধরনের ছুটি নিতে পারবেন না। কিন্তু আপনি যখন ৬ থেকে ৯ মাস পর আপনার দেশে ফিরে আসবেন তখন চাইলে কিছুদিনের জন্য ছুটি নিতে পারেন।
ডিপ্লোমা মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা
ডিপ্লোমা মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা, ডিপ্লোমা মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে চার বছর ও দুই বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স সম্পূর্ণ করতে পারেন।মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই এসএসসি কিংবা এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৩.৫০ পেতে হবে। এছাড়াও গণিত ও পদার্থ বিষয়ে আলাদাভাবে ৩.৫০ পেতে হবে
এবং ইংরেজিতে কমপক্ষে ৩.০০ থাকতে হবে। আবার পুরুষদের ক্ষেত্রে উচ্চতা থাকতে হবে ৫ ফিট ৪ ইঞ্চি এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৫ ফিট ২ ইঞ্চি হতে হবে। এছাড়াও চোখের দৃষ্টি শক্তি নূন্যতম ৬/১২ হতে হবে। সাঁতার সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে সাঁতার জানে না এমন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবে না, অবশ্যই সাঁতার জানতে হবে।
মেরিন ইঞ্জিনিয়ারদের জীবন
মেরিন ইঞ্জিনিয়ারদের জীবন, চলুন আজকে আপনাদের জানাবো মেরিন ইঞ্জিনিয়ারদের জীবন কেমন হয়। আমরা অনেক সময় বন্ধু-বান্ধবের সাথে মজার চলে বলে থাকি বন্ধু চল মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হই আর মাসে মাসে ডলার কামাই। আসলেই কি ডলার কামানো এতটাই সহজ। একজন ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার এর বেতন ১৫০০ ডলার হয়ে থাকে।
এই ১৫০০ ডলার ইনকাম করার জন্য একজন ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার কে ২৪ ঘন্টা কাজ করতে হয়। যদিও ডিউটি টাইম থাকে ৮ থেকে ১২ ঘন্টা কিন্তু কিছু কিছু সময় অবসর টাইমেও কাজ করতে হয়। কিন্তু আমরা যারা অফিস আদালতে কাজ করি তাদের ক্ষেত্রে অফিসের টাইম শেষ হলে বাড়িতে এসে নিশ্চিন্তে পরিবারের সঙ্গে ঘুমিয়ে যাই।
কিন্তু মেরিন ইঞ্জিনিয়াররা এটি পারে না কারণ তাদের ডিউটি শেষ হলেও ইমারজেন্সি কোন সমস্যা হলে সাথে সাথে কাজ শুরু করতে হয়। এছাড়াও পরিবার-পরিজন ছাড়া সমুদ্রের মাঝে জীবন যাপন করতে হয় যা সবার জন্য সম্ভব নয়। এরপরেও আমরা অনেকেই মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই যাতে করে পরিবার এবং স্ত্রী সন্তান সুখে শান্তিতে জীবন কাটাতে পারে।
আমরা যারা মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই তাদের মধ্যে বেশিরভাগই মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত পরিবারের হয়ে থাকে তাই তারা তাদের পরিবারের দিকে তাকিয়ে নিজের স্বপ্নগুলো বিসর্জন দেয় যাতে করে পরিবার সুখে শান্তিতে থাকতে পারে। এছাড়াও মেরিন ইঞ্জিনিয়াররা ঈদ পুজা পহেলা বৈশাখ ইত্যাদি বিশেষ দিনগুলো কাটাতে হয় মাছ সমুদ্রে যা খুবই হতাশা জনক।
উপসংহার
আপনি যদি এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে থাকেন তাহলে ইতিমধ্যে আপনি জানতে পেরেছেন যে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার খরচ কত হতে পারে। এছাড়াও মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পর্কিত যত রকমের কমন প্রশ্ন রয়েছে সকল কমন প্রশ্নের উত্তর নিয়ে পুরো আর্টিকেলটি সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।তাই আপনি যদি এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়তে পারেন তাহলে এই সকল প্রশ্নের উত্তর খুব সহজে জানতে পারবেন।
মারিয়া অনলাইন ব্লকের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url