আপেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - আপেলের পুষ্টিগুণ

আপেলিন সিরাপ এর উপকারিতা জানতে ক্লিক করুনপ্রতিদিনের মতো আজকেও কয়েকটি সঠিক প্রশ্নের উত্তর নিয়ে হাজির হলাম। আজকের আর্টিকেলের মেন টপিক হল আপেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে এবং এর সাথে মিল রেখে আরো বেশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর নিয়ে পুরো আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে। তাহলে চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক যে আপেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতার সাথে মিল রেখে কি কি ট্রফিক
আপেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

নিয়ে পুরো আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে। যেমনঃ আপেলের পুষ্টিগুণ, রাতে আপেল খাওয়ার উপকারিতা, আপেল কি ভিটামিন আছে, আপেল খেলে কি ওজন বাড়ে, আপেল সিদ্ধ খেলে কি হয়, খালি পেটে আপেল খেলে কি হয়, আপেল খাওয়ার নিয়ম, আপেলের স্বাস্থ্য উপকারিতা, সকালে খালি পেটে আপেল খাওয়ার উপকারিতা, আপেল খেলে কি গ্যাস হয়, বাচ্চাদের আপেল খাওয়ার নিয়ম এই সকল বিষয় নিয়ে পুরো আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।

সূচীপত্রঃ আপেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

আপেলের পুষ্টিগুণ

আপেল একটি জনপ্রিয় খাবার নামে পরিচিত আপেলে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুন দেখা যায় এবং খেতে সুস্বাদু। প্রতি ১০০ গ্রাম আপেলের পুষ্টিগুণ নিয়ে নিচে তুলে দেয়া হলো যা দেখলে আপনার চোখ কপালে উঠে যাবে। যেমনঃ
  • শর্করাঃ 9.5 গ্রাম
  • পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটঃ 0.05 গ্রাম
  • প্রোটিনঃ 0.3 গ্রাম
  • চিনিঃ 10.3 গ্রাম
  • চর্বিঃ 0.2 গ্রাম
  • খাদ্যআশ –-২.৪ গ্রাম
  • ফাইবারঃ 2.4 গ্রাম
  • মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটঃ 0.01 গ্রাম
  • স্যাচুরেটেড ফ্যাটঃ 0.03 গ্রাম
  • ক্যালোরিঃ 52 কিলোক্যালরি
  • খাদ্যশক্তিঃ ৫২ কিলোক্যালরি
  • জলীয় অংশঃ ৮৫.৮৬ গ্রাম
  • ক্যারোটিনঃ ২৭ আইইউ
  • ভিটামিন সিঃ 8.4 মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন বি১ঃ 0.02 মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন বি২ঃ 0.02 মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন বি৩ঃ 0.1 মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন বি৫ঃ 0.2 মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন বি৬ঃ 0.1 মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন বি৯ঃ 4 মাইক্রোগ্রাম
  • ভিটামিন ইঃ 0.1 মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন কেঃ 1 মাইক্রোগ্রাম
  • ক্যালসিয়ামঃ 7 মিলিগ্রাম
  • আয়রনঃ 0.2 মিলিগ্রাম
  • পটাসিয়ামঃ 107 মিলিগ্রাম
  • ম্যাগনেসিয়ামঃ 8 মিলিগ্রাম
  • ফসফরাসঃ 15 মিলিগ্রাম
  • সোডিয়ামঃ 1 মিলিগ্রাম
  • জিঙ্কঃ 0.1 মিলিগ্রাম
১০০ গ্রাম আপেলে উপরে দেওয়া এই সমস্ত পুষ্টিগুণ দেখা যায়।

আপেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা


আপেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আলোচনা করব আপেলের উপকারিতা বলে শেষ করার মত নয়। কারণ আপেলে বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা রয়েছে এবং পুষ্টি গুণে ভরপুর চিকিৎসকেরা রোগীদের জন্য আপেল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাহলে চলুন বেশি কথা না বলে আপেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক। 

আপেল একটি পুষ্টিকর ফল আমরা সবাই জানি। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। আপেল খাওয়ার উপকারিতাগুলো নিচে তুলে ধরা হলোঃ 
  1. হজম ভালো হয়
  2. ওজন কমাতে সাহায্য করে
  3. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
  4. ত্বক ভালো রাখে
  5. দাঁত ভালো রাখে
  6. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
  7. হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
  8. ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
  9. ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা করে
  10. হাঁপানির তীব্রতা হ্রাস করে
  11. দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি
  12. চুল চকচকে রাখে
হজম ভালো হয়ঃ আপেলের মধ্যে থাকা ফাইবার হজম ভালো রাখতে সাহায্য করে। আপেলের ফাইবার খাবারকে দ্রুত হজম করতে সাহায্য করে।

ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ আপেলের মধ্যে থাকা ফাইবার ওজন কমাতে অন্যরকম ভূমিকা পালন করে। ফাইবার খাবারকে দ্রুত হজম করতে পারে, যার ফলে পেট ভরা থাকে এবং অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ আপেলের মধ্যে রয়েছে ফাইবার যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ফাইবার খাদ্যনালীতে পানির পরিমাণ বাড়ায়, যার ফলে মল নরম হয় এবং সহজে মলত্যাজাকরা যায়।

ত্বক ভালো রাখেঃ আপেলে আছে ভিটামিন সি যা ত্বক ভালো রাখে। ভিটামিন সি ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়, যার ফলে ত্বক মসৃণ ও টানটান থাকে।

দাঁত ভালো রাখেঃ আপেলের মধ্যে থাকা ফাইবার দাঁত ভালো রাখতে সাহায্য করে। ফাইবার দাঁতের মধ্যে জমে থাকা খাবার ও ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ আপেলে রয়েছে ভিটামিন সি, পটাশিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখে, পটাশিয়াম শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে ক্ষতিকর ফ্রি র‍্যাডিকেল থেকে রক্ষা করে।

হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখেঃ আপেলে থাকা পটাশিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্টের কোষগুলিকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ আপেলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে ক্ষতিকর ফ্রি র‍্যাডিকেল থেকে রক্ষা করতে অয়ারে, এবং ক্যান্সারের কোষ তৈরিতে অন্যরকম ভূমিকা পালন করে।

ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা করেঃ আমাদের দেশে বর্তমানে ডায়াবেটিসের রোগী দিন দিন বেড়েই চলছে। ডায়াবেটিকস কমানোর জন্য প্রতিদিন একটি করে আপেল খেতে পারেন। আপেল ডায়াবেটিস কমাতে ২৮ শতাংশ কাজ করে থাকে কিন্তু বেশি বড় আপেল না খেয়ে মাঝারি সাইজের আপেল খাবেন। 
হাঁপানির তীব্রতা হ্রাস করেঃ প্রতিদিন একটি করে মাঝারি সাইজের আপেল খেলে আপনার হাঁপানির তীব্রতা হ্রাস করতে সাহায্য করবে। 

দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিঃ আপনি যদি নিয়মিত একটি করে আপেল খেতে পারেন তাহলে আপনার দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।

চুল চকচকে রাখেঃ প্রতিদিন একটি করে আপেল খান দেখবেন চুলে শ্যাম্পু না দিয়েই চুল চকচকে করছে।

এছাড়াও আরো বিভিন্ন রকম উপকারিতা পাওয়া যায় আপেলে তাই আপনি যদি সুস্থ থাকতে চান তাহলে নিয়মিত আপেল খেতে পারেন।

আপেল খাওয়ার অপকারিতা

আপেলে যেমন উপকারিতা দিয়ে ভরা তেমনি ভাবে আপেলে অপকারিতাও রয়েছে যেগুলো জেনে রাখা প্রয়োজন নিচে আপেল খাওয়ার অপকারিতা গুলো তুলে ধরা হলঃ
  • অতিরিক্ত ফাইবার গ্রহণের কারণে পেট ফাঁপা, বমি বমি ভাব বা ডায়রিয়া হতে পারে।
  • আপেলে থাকা অ্যাসিডের কারণে পেটে ব্যথা বা অস্বস্তি হতে পারে।
  • আপেলে থাকা অ্যালার্জেনগুলির কারণে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
  • অতিরিক্ত আপেল খেলে পেট ফাঁপা এবং গ্যাস হতে পারে।
  • অতিরিক্ত আপেল খেলে দাঁতে দাগ পড়তে পারে।
  • অতিরিক্ত আপেল খেলে অ্যালার্জি হতে পারে।
মোট কথার এক কথা হল আপনি যদি পরিমাণ মতো আপেল খান তাহলে এই সমস্ত সমস্যা দেখা দিবে না। কিন্তু যদি পরিমাণের চেয়ে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন তাহলে এ সমস্ত সমস্যা দেখা দিতে পারে সেজন্য সতর্কতা অবলম্বন করবেন।

রাতে আপেল খাওয়ার উপকারিতা

রাতে আপেল খাওয়ার উপকারিতা আপেল আপনি যখনই খান না কেন উপরে দেওয়া সমস্ত উপকারিতা গুলো পেয়ে যাবেন। কারণ আপেল খাওয়ার নির্দিষ্ট কোন সময় বেঁধে দেওয়া নেই তাই আপনি যদি আপেল খাওয়ার উপকারিতা পেতে চান তাহলে আপনি যেকোনো সময় আপেল খেতে পারেন। কিন্তু আপেল খাওয়ার সময় একটা কথা মাথায় রাখবেন সেটি হল অতিরিক খেয়ে ফেলবেন না
কারণ আপনি হয়ত জানেন  যে কোন জিনিস অতিরিক্ত খাওয়া ভালো নয়। আপেলে যে সমস্ত উপকারিতা রয়েছে যদি পরিমাণ এর চেয়ে বেশি খেয়ে ফেলেন তাহলে উপকারের চেয়ে ক্ষতি বেশি হতে পারে। চিকিৎসকেরা রাতে আপেল খেতে নিষেধ করে থাকে কারণ রাতে আপেল খেলে গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেজন্য আপনি যদি আপেলের উপকারিতা পেতে চান তাহলে রাতে না খেয়ে সকালে খেতে পারে।

আপেল কি ভিটামিন আছে

আপেল কি ভিটামিন আছে এর উত্তর সহজ করে বললে বলা যায় যে হ্যাঁ আপেলে ভিটামিন আছে। আপনি যদি আপেলের পুষ্টি গুণ উপরে পড়ে থাকেন তাহলে ইতিমধ্যে আপনি জানেন যে কি কি ভিটামিন রয়েছে তার পরেও আপনাদের জন্য আরো একবার বলার চেষ্টা করছি। যেমনঃ ভিটামিন সিঃ 8.4 মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি১ঃ 0.02 মিলিগ্রাম, 
ভিটামিন বি২ঃ 0.02 মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি৩ঃ 0.1 মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি৫ঃ 0.2 মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি৬ঃ 0.1 মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি৯ঃ 4 মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন ইঃ 0.1 মিলিগ্রাম, ভিটামিন কেঃ 1 মাইক্রোগ্রাম এই সমস্ত ভিটামিন একটি মাঝারি আপেলে দেখা যায়।

আপেল খেলে কি ওজন বাড়ে

আপেল খেলে কি ওজন বাড়ে আপনার কি মনে হয় আপেল খেলে কি ওজন বাড়ে আমি বিভিন্ন গবেষণা করে এবং ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে জানতে পারলাম যে আপেল খেলে 100% ওজন বাড়ে। এর কারণ হলো আপেলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন আছে যে ভিটামিন গুলো আমাদের শরীরে ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। আপনি যদি নিয়মিত একটি করে আপেল খান তাহলে দেখবেন 
কয়েক দিনের ভিতরে আপনার ওজন কয়েক কেজি বেড়ে গেছে। কিন্তু আপনার শরীর বাড়ানোর জন্য অতিরিক্ত আপেল খেতে যাবেন না এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। আপনি যদি নিয়ম করে প্রতিদিন মাঝারি সাইজের কিংবা একটু বড় হলেও সমস্যা নেই যদি খেতে পারেন তাহলে দেখবেন আপনার শরীর হুরহুর করে বাড়তে শুরু করেছে যা দেখলে আপনি নিজেই চমকে যাবেন।

আপেল সিদ্ধ খেলে কি হয়

আপেল সিদ্ধ খেলে কি হয় এই প্রশ্ন অনেকেই করে থাকেন এই প্রশ্নের সহজ উত্তর হল আপেল সিদ্ধ করে খেলে ওজন কমতে সাহায্য করে। আপেল সিদ্ধ করে বাচ্চাদের খাওয়াতে পারেন কারণ বাচ্চারা শক্ত আপেল খেতে পারে না। কিন্তু যাদের বয়স দুই থেকে দশ বছর কিংবা তারও বেশি তারা যদি সিদ্ধ আপেল খেতে চান তারাও খেতে পারবেন এতে কোন সমস্যা নেই।
 কিন্তু আপনি যখন আপেল সিদ্ধ করে খাবেন তখন অনেক পুষ্টিগুণ কমে যাবে, কমে যাবে বলে এই নয় যে সব পুষ্টি উপাদান শেষ হয়ে যাবে বিষয়টি তেমন নয়। তাই যাদের বয়স বেশি তারা আপেল সিদ্ধ করে না খেয়ে কাঁচা কিংবা পাকা আপেল খেতে পারেন এতে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার হবে।

খালি পেটে আপেল খেলে কি হয়

এমনও পরিবার রয়েছে যাদের খাবার তালিকায় আপেল থাকা আবশ্যক কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা যে খালি পেটে আপেল খেলে কি হয়। খালি পেটে আপেল খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে এবং চিকিৎসকেরা অনেক সময় রাতে আপেল খেতে মানা করে সকালে খালি পেটে আপেল খেতে বলেন। কারণ সকালে খালি পেটে আপেল খেলে স্টকের ঝুঁকি কমায়, স্বাস্থ্য ঠিক রাখে, 

এবং সারাদিন চলতে যে এনার্জি খরচ হয় সেটিও পূরণ করতে সাহায্য করে ইত্যাদি। আমরা অনেকে বলে থাকি যে প্রতিদিন একটি করে আপেল খেলে ডাক্তার আপনার পরিবার থেকে দূরে থাকবে কারণ আপেলে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার দেহের রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে। তাই আপনার পরিবারকে সুস্থ রাখতে নিয়মিত আপেল খেতে পারেন।

আপেল খাওয়ার নিয়ম

আপেল খাওয়ার নিয়ম আপেল একটি পুষ্টিকর ফল যা বিভিন্নভাবে খেতে পারেন। তবে, আপেল খাওয়ার কিছু নিয়ম আছে যা মেনে চললে আপেলের পুষ্টিগুণ থেকে সর্বোচ্চ উপকার পেতে পারেন, তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক।

আপেল খাওয়ার নিয়মঃ

আপেল খাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হলো সকালে ঘুম থেকে উঠে বা দুপুরের খাবারের আগে। এ সময় আপেলে থাকা ফাইবার হজম শক্তি বাড়ায় এবং শরীরকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। আপেল খাওয়ার সময় খোসা ছাড়িয়ে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায় না। কারণ, আপেলে থাকা বেশিরভাগ পুষ্টি উপাদান খোসার মধ্যেই থাকে। আপেল খাওয়ার সময় ভালো করে ধুয়ে খাবেন। 
কারণ, আপেল চাষের সময় বিভিন্ন কীটনাশক ও রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। এসব রাসায়নিক থেকে মুক্তি পেতে আপেল ভালো করে ধুয়ে খেতে হবে। আপেল খাওয়ার আগে ভালো করে কামড়ে খেতে হবে, এতে আপেলে থাকা পুষ্টি উপাদান ভালোভাবে হজম হবে। আপেল খাওয়ার পর এক গ্লাস পানি পান করলে হজমে আরও বেশি সাহায্য করবে। আপনি কি আপেল খাওয়ার সঠিক নিয়ম এবং সময় সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা পেয়েছেন।

আপেলের স্বাস্থ্য উপকারিতা

আপেলের স্বাস্থ্য উপকারিতা নিয়ে উপরে ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করে দেখে দেয়া হয়েছে। এখন আপনাদের আপেলের স্বাস্থ্য উপকারিতা কি কি রয়েছে সংক্ষেপে বলার চেষ্টা করব। আপনি যদি আপেলের স্বাস্থ্য উপকারিতা গুলো ভালোমতো বুঝতে না পারেন, তাহলে উপরে দেওয়া বর্ণনা সহ পড়ে নিতে পারেন এতে আপনি ক্লিয়ার একটা ধারণা পেয়ে যাবেন। কারণ একই কথা বারবার না বলাই বেটার তাই সংক্ষেপে বলব এবং কিছু আপডেট দেওয়ার চেষ্টা করব।
  1. স্বাস্থ্যের রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
  2. লিভার ও নালীর সমস্যা রোধ করে অল্প দিনে।
  3. প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে।
  4. ক্ষতিকর কোলেস্টেরল একেবারেই নেই।
  5. কোলেস্টেরল মাত্রা খুব কম দেখা যায়।
  6. খুব সহজেই হজম হয়।
  7. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানে সমৃদ্ধ আপেল।
  8. দেহে শক্তি বৃদ্ধি পড়তে অন্য রকম ভূমিকা পালন করে।
  9. ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে খুব সহজে।
  10. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানে ভরপুর।
  11. কোলন ক্যানসার রোধ করতে সাহায্য করে।
  12. সবুজ আপেলে আছে প্রচুর পরিমানে ফাইবার। 
  13. হাড়ের গঠন মজবুত করতে সাহায্য করে। 
  14. আপেল খনিজ সমৃদ্ধ একটি ফল।
  15. ওজন নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
  16. ত্বক সুন্দর করে তোলে।
  17. ফুসফুসের কার্যকারিতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। 
  18. ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেক অংশে কমে যায়।
  19. শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
  20. হাঁপানি থেকে বাঁচতে সাহায্য করে।

সকালে খালি পেটে আপেল খাওয়ার উপকারিতা

সকালে খালি পেটে আপেল খাওয়ার উপকারিতা সকালে খালি পেটে আপেল খাওয়ার উপযুক্ত সময় বলে ডাক্তারেরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিন্তু এখন কথা হল যে সকালে খালি পেটে আপেল খেলে আমার শরীরে কি কি উপকারিতা পাব আপনি যদি এই বিষয়ে এখনো না জেনে থাকেন তাহলে উপরে দেওয়া সকল উপকারিতা গুলো পড়ে নিতে পারেন। 
কারণ আপনি যদি সকালে খালি পেটে আপেল খান তাহলে উপরে দেওয়া যে সমস্ত উপকারিতা রয়েছে সকল উপকারিতা আপনি পেয়ে যাবেন। আশা করি বুঝতে পেরেছেন সকালে খালি পেটে আপেল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।

আপেল খেলে কি গ্যাস হয়

আপেল খেলে কি গ্যাস হয় আপনি যদি এর সহজ উত্তর খোঁজেন তাহলে এর উত্তর হল হ্যাঁ অথবা না দুটোই। আপনি যদি সকালে কিংবা দুপুরের আগে আপেল খান তাহলে গ্যাসের সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। কিন্তু আপনি যদি বিকালে কিংবা রাত্রে আপেল খেতে যান তাহলে আপনার শরীরে গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ রাত্রে আমাদের শরীর রিলাক্স মুডে থাকে

তাই আপনি যদি এ সময় অতিরিক্ত আপেল খেয়ে ফেলেন তাহলে গ্যাসের সম্ভাবনা 99 শতাংশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেজন্য ডাক্তার সকালে আপেল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিন্তু আপনি যদি সকালেও অতিরিক্ত আপেল খেয়ে ফেলেন তিন চারটা তাহলেও গ্যাসের সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে আশা করি বুঝতে পেরেছেন কোন সময় আপেল খেলে গ্যাস হয়।

বাচ্চাদের আপেল খাওয়ার নিয়ম

বাচ্চাদের আপেল খাওয়ার নিয়ম আপনার বাচ্চার বয়স যখন ছয় মাস হবে তখন ডাক্তারেরা আপেল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে তাও আবার সিদ্ধ করে খাওয়াতে হবে কারণ এটি হজম করতে সাহায্য করবে। বাচ্চারা সাধারণত ৬ মাস বয়সে মায়ের বুকের দুধ খাওয়া বাদ দিয়ে থাকে তখন অন্য খাবার খাওয়া শুরু করলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। 
কারণ বাচ্চাদের পরিপাকতন্ত্র কিছুটা সময় নিয়ে থাকে নতুন খাবার হজম করার জন্য এতে কোন ধরনের সমস্যা হবে না। একটা কথা না বললেই নয় বাচ্চাদের কখনো রাত্রে আপেল খাওয়াবেন না কারণ আপনি যদি আপনার বাচ্চাকে রাত্রে আপেল খাওয়ান তাহলে আপনার বাচ্চার গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর জন্য বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে আপনি সকালে খাওয়াতে পারেন কিংবা দুপুরের আগে।

আপেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতার শেষ কথা

আমার এই ক্ষুদ্র জ্ঞানে বিভিন্ন রিসার্চ করে আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করেছি যে আপেল খাওয়ার কি কি উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। আপনি যদি আমাদের এই আর্টিকেলটি এ টু জেড মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে আপেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সহ বেশ কিছু ট্রফিক এর উপরে জ্ঞান লাভ করতে পেরেছেন।

আপনি যদি আপেলের এতগুলো উপকারিতা জেনেও আপেল খাওয়া না শুরু করেন তাহলে আজকে থেকেই নিয়মিত আপেল খাওয়া শুরু করতে পারেন। কারণ আপনি যদি নিয়মিত আপেল খেতে পারেন তাহলে আপনার দেহের উন্নতি ঘটবে এবং মন মানসিকতা এবং শরীরের বিভিন্ন রোগ থেকে আপেল আপনাকে বাঁচাতে সাহায্য করবে। আজকে এখানেই বিদায় নিচ্ছি আবার কথা হবে অন্য কোন টপিক নিয়ে সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মারিয়া অনলাইন ব্লকের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url