দেশি মুরগির ঔষধের তালিকা - ভ্যাকসিন - খাবার

ব্রয়লার মুরগির ৩০ দিনের ঔষধের তালিকা জানতে ক্লিক করুনদেশি মুরগির ঔষধের তালিকা নিয়ে আজকের এই পুরো আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে এবং এর সাথে মিল ঢুকে আরো কয়েকটি বিষয়ের উপর আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে। যেমনঃ দেশি মুরগির ঝিমানো রোগের ঔষধ, দেশি মুরগির প্রাকৃতিক ঔষধ, দেশি মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা, দেশি মুরগির ওজন বৃদ্ধির ঔষধ, দেশি মুরগির খাবার তালিকা, মুরগির ঔষধ রেনামাইসিন, দেশি মুরগির রোগ নির্ণয়, 
দেশি মুরগির ঔষধের তালিকা

সূচীপত্রঃ দেশি মুরগির ঔষধের তালিকা

মুরগির ক্যালসিয়াম ঔষধের নাম, দেশি মুরগির ভ্যাকসিন কোথায় পাওয়া যায়, দেশি মুরগির বাচ্চার ভ্যাকসিন, মুরগির ভ্যাকসিনের দাম আপনার যদি এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর অজানা থেকে থাকে তাহলে এই পুরো আর্টিকেলটি আপনার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে তাহলে চলুন সময় নষ্ট না করে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে ফেলি এবং এই সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করি। 

দেশি মুরগির ঔষধের তালিকা

দেশি মুরগির ঔষধের তালিকা সম্পর্কে সবারই জানা থাকা প্রয়োজন কারণ গ্রাম অঞ্চলে প্রত্যেকটা বাড়িতে দেশি মুরগি পালন করে থাকে। অন্যান্য মুরগির চেয়ে দেশি মুরগির চাহিদা অনেক বেশি এবং মাংস অনেক সুস্বাদু হয়ে থাকে। কিন্তু বিভিন্ন রোগের কারণে আমাদের দেশি মুরগির অনেক ধরনের ক্ষতি হয়ে থাকে এবং বিভিন্ন রোগের কারণে অনেক মুরগি মারা যায়।

তাদের জন্য এই আর্টিকেলটি লেখা হয়েছে এই আর্টিকেলে দেশি মুরগির যে সমস্ত ঔষুধ রয়েছে সমস্ত ঔষধ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং কিভাবে খাওয়াতে হয় সেটিও বলে দেওয়া হয়েছে। দেশি মুরগির ঔষধ হিসাবে সাধারণত .২২ টি ঔষধ দেখা যায় যা নিচে আলোচনা করা হয়েছে।

রাণীক্ষেতঃ অক্সিটেট্রাসাইক্লিন, টেট্রাসাইক্লিন, ডক্সিসাইক্লিন, ট্রাইমিথোপ্রিম-সালফোমেটক্সাজোলের মতো এন্টিবায়োটিক।

গামবোরোঃ সিপ্রোফ্লক্সাসিন, এমোক্সিসিলিন, এমপিসি, টিএমপি-এসএমজি, ট্রাইমিথোপ্রিম-সালফোমেটক্সাজোলের মতো এন্টিবায়োটিক।

কক্সিডিওসিসঃ সালফোনামাইড গ্রুপের ঔষধ, যেমন সালফাক্লোরপিরিডাজিন, সালফাডিমিডিন, সালফামেথাজোল, সালফাক্লোরিন, সালফাক্লোরহেক্সিডিল।

সাইনোভিয়াল ফ্লুঃ এন্টি-ইনফ্লেমেটরি ঔষধ, যেমন গ্লুকোকোর্টিকয়েড, ইনডোমেথাসিন।

ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনঃ বিভিন্ন ধরনের এন্টিবায়োটিক, যেমন পেনিসিলিন, অ্যামপিসিলিন, সেফট্রিয়াক্সন, ক্লোরামফেনিকোল, মাইক্রোসিনোমাইসিন, এরিথ্রোমাইসিন।

ভাইরাল ইনফেকশনঃ বিভিন্ন ধরনের এন্টিবায়োটিক, যেমন এনান্টিভাইরাল ঔষধ, যেমন ইন্টারফেরন, রিবাভাইরিন।

কৃমিঃ বিভিন্ন ধরনের কৃমিনাশক, যেমন ফার্মালডিহাইড, ফ্লোবেন্ডাজোল, পাইরানটেল পামেটেট, লিভারম্যাক।

ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিনঃ বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিন জাতীয় ঔষধ। উল্লেখ্য, ঔষধের নাম বিভিন্ন দেশে এবং বিভিন্ন কোম্পানির ক্ষেত্রে ভিন্ন হতে পারে।

এখন আপনাদের বলব কোন ওষুধ কত দিনে খাওয়াতে হবেঃ
  • প্রথম দিনে গ্লুকোজ বা লাইসোভিট দিতে হবে।
  • ২ থেকে ৪ দিন এমোক্সিসিলিন ব্যবহার করতে পারেন।
  • ২-৫ দিনের বিতর এনডি লাইভ ভ্যাক্সিন+আইবি খাওয়াতে পারেন।
  • ১০-১২ দিনের বিতর গামবোরো লাইভ ভ্যাক্সিন দিতে পারেন।
  • ১২-১৪ দিন ভিটামিন ও লিভারটনিক দিতে হবে।
  • ১৮-২২ দিনের বিতরে আবারও গামবোরো লাইভ ভ্যাক্সিন দিতে হবে।
  • ২৪-২৬ দিনের বিতরে এনডি লাইভ ভ্যাক্সিন রাণীক্ষেত ব্যবহার করতে হবে।
  • ২৪-২৬ দিন এম্প্রোলিয়াম+সিপ্রো ব্যবহার করুন।
  • ৩০ দিনে ফাউলপক্স ভ্যাক্সিন দিতে হবে।
  • ৩৫ দিনে কৃমিনাষক ঔষধ খাওয়াতে হবে।
  • ৪৫-৪৮ দিনের বিতরে রানীক্ষেত লাইভ ভ্যাক্সিন (যদি প্রাদুর্ভাব বেশি থাকলে তাহলে খাওয়াতে পারেন)
  • ৫০ দিন থেকে নিয়মিত লিভারটনিক, প্রোবায়োটিক, ভিটামিন খাওয়াতে পারেন।
আপনি যদি এই সমস্ত ঔষধ আমার দেওয়া নিয়মে খাওয়াতে পারেন তাহলে আপনার মুরগি অনেক অংশে সুস্থ থাকবে এবং আপনার যদি কোনরকম কনফিউশন মনে হয় তাহলে আপনার নিকটস্থ চিকিৎসকের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খাওয়াতে পারেন।

দেশি মুরগির ঝিমানো রোগের ঔষধ

দেশি মুরগির ঝিমানো রোগের ঔষধ নিয়ে আমরা অনেকেই দুশ্চিন্তায় পড়ে আছি কারণ অনেক সময় দেখা যায় ভালো ভালো মুরগি ঝিমানো শুরু করেছে। এবং তার সাথে মারা যেতেও শুরু করে যা দেখে আমাদের অনেকটা ভয় লাগে সেই সাথে দেখা যায় কয়েকদিনের ভিতরে সব মুরগি মারা যায়। দেশি মুরগির ঝিমানো রোগের প্রধান কারণ হলো ভাইরাসজনিত সংক্রমণ। 

এছাড়াও, ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ, কৃমি, ঠান্ডা, পুষ্টিহীনতা ইত্যাদি কারণেও মুরগি ঝিমাতে পারে। ঝিমানো রোগের চিকিৎসা নির্ভর করে রোগের কারণ এবং তীব্রতার উপর। ভাইরাসজনিত সংক্রমণের ক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। তবে, দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও, ভিটামিন সি, ইলেকট্রোলাইট ইত্যাদি দেওয়া যেতে পারে।

ঝিমানো রোগের ঔষধের নাম হলোঃ

অক্সিটেট্রাসাইক্লিনঃ এটি একটি এন্টিবায়োটিক যা ভাইরাসজনিত সংক্রমণের দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যবহার করা যেতে পারে।

ভিটামিন সিঃ এটি একটি ভিটামিন যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

ইলেকট্রোলাইটঃ এটি শরীরের তরল ভারসাম্য রক্ষায় সাহায্য করে।

ঝিমানো রোগ প্রতিরোধের জন্য আরো কয়েকটি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। যেমনঃ
  • খামার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং স্বাস্থ্যসম্মত ব্যবস্থাপনা মেনে চলা। 
  • মুরগির খাবার এবং পানি পরিষ্কার রাখতে হবে।
  • মুরগিকে নিয়মিত ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিন জাতীয় ঔষধ খাওয়াতে হবে।
  • মুরগিকে নিয়মিত টিকা দিতে হবে।
  • ঝিমানো রোগের লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ পশুচিকিৎকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
এই সমস্ত নিয়ম গুলো ফলো করেও যদি আপনার দেশি মুরগি ঝিমানো ঠিক না হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিতে হবে। তাহলে দেখবেন কয়েক দিনের ভেতরেই আপনার দেশি মুরগির ঝিমানো ঠিক হয়ে গিয়েছে। 

দেশি মুরগির প্রাকৃতিক ঔষধ

দেশি মুরগির প্রাকৃতিক ঔষধ মানে হল ঘরোয়া ভাবে যে সমস্ত ঔষধ তৈরি করে দেশি মুরগিকে খাওয়ানো হয় মূলত তাকেই বলা হয় দেশি মুরগির প্রাকৃতিক ঔষধ। ঘরোয়া ভাবে ঔষধ তৈরি করে কি কি রোগ থেকে আপনার মুরগি সুস্থ থাকবে সেটি নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে। দেশি মুরগির প্রাকৃতিক ঔষধ বলতে বোঝায় এমন কিছু উপাদান যা প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া যায়।

এবং মুরগির বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এসব ঔষধের মধ্যে সাধারণত কোনো রাসায়নিক উপাদান থাকে না।

দেশি মুরগির প্রাকৃতিক ঔষধের মধ্যে যা যা রয়েছে নিচে তুলে ধরা হলোঃ

আদা-হলুদঃ আদা, হলুদ একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। এটি কাশি, ঠান্ডা, সর্দি, কৃমি, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা ইত্যাদি রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

রসুনঃ রসুন কৃমি, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা, ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়া ইত্যাদি রোগের জন্য ভালো কাজ করে।
নিমপাতাঃ নিমপাতা একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিভাইরাল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান। যা কৃমি, সর্দি, কাশি, ঠান্ডা, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা, ত্বকের সমস্যা, চর্মরোগ ইত্যাদি রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। 

আমলকীঃ আমলকী একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি এবং অ্যামিনো অ্যাসিডের উৎস। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

কালোজিরাঃ কালোজিরা একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে অন্যরকম ভূমিকা পালন করে।

হরিতকি-সরিষার তেলঃ হরিতকি গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা, ত্বকের সমস্যা, চর্মরোগ, কৃমি ইত্যাদি রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।

এছাড়াও বিভিন্ন উপাদান দিয়ে দেশি মুরগির প্রাকৃতিক ঔষধ বানানো যায়। দেশি মুরগি ঘাস, সবুজ লতা পাতা, শাকসবজি এই সমস্ত খাবার পছন্দ করে থাকে আপনি চাইলে উপরে দেওয়া সমস্ত উপাদানের সাথে এই সমস্ত উপাদান দিতে পারেন।

দেশি মুরগিকে প্রাকৃতিক খাবার বেশি খাওয়ালে ওজন বৃদ্ধিতে এবং রোগ প্রতিরোধ করতে ও ডিম উৎপাদনে সহযোগিতা করে। আপনি যদি এই সমস্ত উপকার পেতে চান তাহলে প্রাকৃতিক খাবার বেশি বেশি খাওয়াতে পারেন। 

দেশি মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা

দেশি মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা সম্পর্কে না জানলেই নয় কারণ আমাদের গ্রাম অঞ্চলে দেখা যায় প্রত্যেকটা বাড়িতে দেশি মুরগি পালন করে থাকে। আবার অনেকে দেশি মুরগির খামারও করে থাকেন তাদের জন্য ভ্যাকসিন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। 

কারণ আপনি যদি নিয়মিত ভ্যাকসিন না করতে পারেন তাহলে আপনার দেশি মুরগির বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই হতে পারে। সেজন্য সমস্ত ভ্যাকসিন নিয়ে হাজির হলাম। যাতে করে মুরগির রোগ বালাই কম হয়, সেজন্য নিয়মিত ভ্যাকসিন দিতে হবে।
 
দেশি মুরগির জন্য প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিনগুলো হলোঃ

রাণীক্ষেতঃ রাণীক্ষেত একটি অত্যন্ত সংক্রামক এবং মারাত্মক রোগ। রাণীক্ষেত ভ্যাকসিন মুরগিকে এই রোগ থেকে রক্ষা করে।

গামবোরোঃ গামবোরো একটি ভাইরাসজনিত রোগ যা মুরগির মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। গামবোরো ভ্যাকসিন মুরগিকে এই রোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

ফাউল পক্সঃ ফাউল পক্স একটি ভাইরাসজনিত রোগ যা মুরগির শরীরে ফোস্কা সৃষ্টি করে। ফাউল পক্স ভ্যাকসিন মুরগিকে রোগ থেকে বাচায়।
কলেরাঃ কলেরা একটি ব্যাকটেরিয়া রোগ যা মুরগির মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে ওঠে। কলেরা ভ্যাকসিন মুরগিকে এই রোগ থেকে রক্ষা করে খুব সহজেই।

কক্সিডিওসিসঃ কক্সিডিওসিস একটি পরজীবীজনিত রোগ যা মুরগির পাকস্থলী এবং অন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। কক্সিডিওসিস ভ্যাকসিন মুরগিকে দিলে অল্প দিনের ভিতরে সব রোগ ভালো হয়ে যায়।

এছাড়াও, দেশি মুরগিকে কৃমি, ঠান্ডা, সর্দি, কাশি ইত্যাদি রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন ঔষধী ভ্যাকসিন ব্যবহার করা যেতে পারে।

এখন আপনাদের জানাবো কোন ভ্যাকসিন কত দিনে দিতে হয়ঃ 
  • ৩-৫ দিনে বয়সে রানীক্ষেত ও ব্রংকাইটিস রোগের জন্য আইবি+এনডি লাইভ ব্যবহার করতে পারেন এক চোখে এক ফোটা।
  • ১০-১২ দিনে গামবোরো রোগের জন্য  আই বি ডি লাইভ মুরগির মুখে এক ফোঁটা দিতে হবে। 
  • ১৮-২২ দিনে গামবোরো রোগের জন্য আবারও আই বি ডি লাইভ মুরগির খাবার পানির সাথে দিতে পারেন।
  • ২৪-২৬ দিনে রানীক্ষেত রোগের জন্য এনডি লাইভ মুরগির  এক চোখে এক ফোঁটা দিতে পারেন। 
  • ৩৫-৪০ দিনে ফাউল পক্স রোগের জন্য  ফাউল পক্স ডি এন এ লাইভ মুরগির  ডানায়সূচ ফুটানোর মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারেন।
  • ৬০-৬৫ দিনে রানীক্ষেত রোগের জন্য  এনডি-কিল্ড মুরগির  ঘাড়ের চামড়ার নিচে ইনজেকশনের মাধ্যমে দিতে পারেন। 
  • ৭০-৭৫ দিনে ফাউল কলেরা রোগের জন্য ফাউল কলেরা কিল্ড মুরগির  ঘাড়ের চামড়ার নিচে ইনজেকশনের মাধ্যমে দিতে হবে। 
দেশি মুরগির ভ্যাকসিন দেওয়ার সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবেঃ
  • ভ্যাকসিন দেওয়ার আগে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ পশুচিকিৎকের পরামর্শ নিতে হবে।
  • ভ্যাকসিন দেওয়ার আগে মুরগির শরীরে কোনো ক্ষত বা সংক্রমণ থাকলে তা নিরাময় করতে হবে।
  • ভ্যাকসিন দেওয়ার পর মুরগিকে ঠান্ডা থেকে রক্ষা করতে হবে।
  • ভ্যাকসিন দেওয়ার ফলে মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং রোগের প্রকোপ কমে যায়।
আপনি যদি এই সমস্ত ভ্যাকসিন নিয়ম মত দেশি মুরগিকে দিতে পারেন তাহলে উপরে দেওয়া সমস্ত রোগের হাত থেকে বাঁচাতে সাহায্য করবে এবং আপনার দেশী মুরগি ধীরে ধীরে সুস্থ হওয়া শুরু করবে এবং ডিম উৎপাদনে সহযোগিতা করবে। 

আপনি যদি মুরগিকে তিন দিন থেকে ৭৫ দিন পর্যন্ত যে সমস্ত ভ্যাকসিন দেওয়া রয়েছে সেই সমস্ত ভ্যাকসিন যদি আপনার দেশি মুরগিকে দিতে পারেন তাহলে দেখবেন অনেক রোগের হাত থেকে আপনার মুরগি রক্ষা পেয়ে যাবে যা দেখলে আপনি চমকে যাবেন। 

দেশি মুরগির ওজন বৃদ্ধির ঔষধ

আমাদের বসতবাড়িতে কমবেশি সবাই দেশি মুরগি পালন করে থাকে কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় যে দেশি মুরগির ওজন ঠিকমতো বাড়ছে না। সে জন্য দেশি মুরগির ওজন বৃদ্ধি করার জন্য বিভিন্ন ঔষধ বাজার থেকে কিনে থাকি যাতে করে দেশি মুরগির ওজন বৃদ্ধি হয়। কিন্তু এখনকার সময় দেখা যায় যে বিভিন্ন ভেজালযুক্ত ঔষধ যা খাওয়ালে মুরগির ওজন 

বৃদ্ধি হওয়া তো দূরের কথা বরং মুরগির বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হয়ে যায়। কিন্তু বাজারে এমনও কিছু ঔষধ আছে যা খাওয়ালে আপনার দেশি মুরগির ওজন বৃদ্ধি পাবে সেজন্য অবশ্যই ওষুধগুলো দেখে কিনতে হবে। এখন আপনাদের মাঝে দেশি মুরগির ওজন বৃদ্ধির ঔষধ নিয়ে আলোচনা করব যা খাওয়ালে আপনার মুরগি দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করবে। যেমনঃ 

ভিটামিনঃ ভিটামিন A, D, E, K, B1, B2, B3, B5, B6, B12, C এবং biotin. 

খনিজ পদার্থঃ ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, সোডিয়াম, ক্লোরিন, আয়রন, জিংক, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, সেলেনিয়াম এবং কোবাল্ট।
প্রোটিনঃ লাইসিন, মেথিওনিন, ট্রিপটোফান, হিস্টিডিন, ভালাইন, লিউসিন, আইসোলিউসিন এবং ফিনাইলআলানাইন।

আপনি যদি এই সমস্ত ঔষধ নিয়ম মেনে খাওয়াতে পারেন তাহলে দেখবেন অল্প দিনের ভিতরে ভালো একটি ফলাফল পেয়ে গেছেন। আপনার দেশি মুরগি যদি এই সমস্ত ঔষধ খাওয়ানোর পরেও ওজন বৃদ্ধি না হয় তাহলে আপনার নিকটস্থ ভালো পশু ডাক্তারের সাথে কিংবা পুরাতন খামারির কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পারেন।

দেশি মুরগির খাবার তালিকা

দেশি মুরগির খাবার তালিকা সম্পর্কে না জানলেই নয় আজকে আমি আপনাদের জানাবো কোন খাদ্য কত দিন বয়সে খাওয়াতে হয় এবং কোন খাবার গুলো খাওয়ালে মুরগির ওজন বাড়ে এবং সুস্থ থাকে এছাড়াও ঘরোয়াভাবে তৈরি করতে পারবেন দেশি মুরগির খাবার যা নিচে ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।

দেশি মুরগির জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য গুলো হলোঃ 

স্টার্টার, গ্রোয়ার, লেয়ার দেশি মুরগির ক্ষেত্রে এই তিনটি খাদ্য বেশি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। স্টার্টার প্রথম সপ্তাহ থেকে 6 সপ্তাহ পর্যন্ত খাওয়াতে পারেন এবং গ্রোয়ার সাত সপ্তাহ থেকে ১৫ সপ্তাহ পর্যন্ত খাওয়াতে পারেন আর 15 সপ্তাহ থেকে ৯০ সপ্তাহ পর্যন্ত লেয়ার খাদ্য খাওয়াতে পারেন।

এখন আপনাদের দেখাব বিভিন্ন উপাদান এবং খাদ্য দিয়ে ১০০ কেজি সিডমিক্স তৈরি করা যায়ঃ 

স্টার্টার খাদ্য তৈরিঃ ৫১ কেজি ভূট্টা, ১০ কেজি গম, ২৫ কেজি সয়াবিন মিল, ৮ কেজি রাইচ পালিশ, ৪ কেজি তিলের খৈল, ১ কেজি ঝিনুক খোসা চূর্ণ, ১ কেজি ভিটামিন-মিনারেল প্রিমিক্স সর্বমোট ১০০ কেজি।

গ্রোয়ার খাদ্য তৈরিঃ ৫৪ কেজি ভূট্টা, ৬ কেজি গম, ২০ কেজি সয়াবিন মিল, ১২ কেজি রাইচ পালিশ, ৪ কেজি সরিষার খৈল, ২ কেজি লাইমস্টোন / ঝিনুক চূর্ণ, ২ কেজি রক্তের গুঁড়া সর্বমোট ১০০ কেজি।

লেয়ার খাদ্য তৈরিঃ ৫৪ কেজি ভূট্টা, ৮ কেজি গম, ১৯ কেজি সয়াবিন মিল, ৮ কেজি রাইচ পালিশ, ২ কেজি প্রোটিন ৬০%, ৮ কেজি লাইমস্টোন / ঝিনুক চূর্ণ, ১ কেজি খাদ্য লবণ সর্বমোট ১০০ কেজি।

ছাড়াও এই উপাদানের সাথে আরো কয়েকটি উপাদান মিশাতে পারেন।
লবণ=৩৫০ গ্রাম, প্রিমিক্স=২৫০ গ্রাম, এল-লাইসিন=১৫০ গ্রাম, ডিসিপি=২৫০ গ্রাম, ডিএল- মিথিওনিন=২০০ গ্রাম,  সালমোনেলা কিলার=৩৪০ গ্রাম, কোলিন ক্লোরাইড=৭০ গ্রাম, টক্সিন বাইন্ডার=১৮০ গ্রাম।
ঘরোয়া ভাবে যে সমস্ত খাবার খাওয়াতে পারেনঃ
  • শস্যঃ গম, ভুট্টা, চাল, ধানের কুড়া, সয়াবিন মিল, তিলের খৈল, ফিস মিল ইত্যাদি।
  • মাংসঃ মাছ, মাংসের গুঁড়া, ডিম ইত্যাদি।
  • শাকসবজিঃ সবুজ শাকসবজি, যেমন- ডাটা শাক, কলমি শাক, বাঁধাকপি, পালং শাক ইত্যাদি।
  • ফলমূলঃ কলা, আম, পেঁপে, আপেল, কমলা ইত্যাদি।
  • খনিজ ও ভিটামিনঃ লবণ, চুন, ঝিনুকের গুঁড়া, ভিটামিন, খনিজ জাতীয় খাবার ইত্যাদি।
দেশি মুরগির খাবার তালিকা সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা দেওয়া হয়েছে আপনি যদি উপরে দেওয়ার সমস্ত খাবার আপনার দেশি মুরগিকে খাওয়াতে পারেন তাহলে দেখবেন ওজন বৃদ্ধি করতে এবং ডিম বৃদ্ধি করতে অনেক সাহায্য করছে। দেশি মুরগির খাবারের পরিমাণ মুরগির বয়স ওজন প্রজনন অবস্থা ইত্যাদির উপর নির্ভর করে। দেশি মুরগিকে প্রতিদিন তাদের ওজনের ১০% পরিমাণ খাবার খাওয়াতে পারেন। 

মুরগির ঔষধ রেনামাইসিন

মুরগির ঔষধ রেনামাইসিন বিভিন্ন চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে যার মাধ্যমে বিভিন্ন রোগ থেকে মুরগি রক্ষা পায়। রেনামাইসিন কিভাবে ব্যবহার করতে হয় এবং রেনামাইসিনের কি কি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে সেই সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। মুরগির ঔষধ রেনামাইসিন হলো একটি এন্টিবায়োটিক যা মুরগির বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ, 

যেমন- সালমোনেলোসিস, কলেরার, কলেরা, ব্যাকটেরিয়াজনিত যকৃতের সংক্রমণ, ইত্যাদি চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এটি একটি টেট্রাসাইক্লিন এন্টিবায়োটিক যা ব্যাকটেরিয়ার কোষের বৃদ্ধি এবং বিভাজনকে বাধা দেয়।
রেনামাইসিন মুরগির খাবারে মিশিয়ে দেওয়া হয়। প্রতি কেজি খাবারের জন্য ৫০-১০০ মিলিগ্রাম রেনামাইসিন দেওয়া হয়। চিকিৎসার সময়কাল সাধারণত ৫-৭ দিন পর্যন্ত হয়ে থাকে।

রেনামাইসিনের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে যা জেনে রাখা প্রয়োজনঃ
  • রেনামাইসিন ব্যবহারের ফলে মুরগির বমি, ডায়রিয়া, ত্বকের সমস্যা, ইত্যাদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
  • দীর্ঘদিন ধরে রেনামাইসিন ব্যবহার করলে মুরগির শরীরে ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে।
  • রেনামাইসিন একটি কার্যকর এন্টিবায়োটিক যা মুরগির বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। তবে, এটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।
আপনি যদি নতুন খামারি হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই যে কোন ঔষধ ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই ভালো একটা পশু ডাক্তারের কিংবা পুরাতন খামারির কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পারেন। এতে করে আরো বিস্তারিত ধারণা পেয়ে যাবেন।

দেশি মুরগির রোগ নির্ণয়

দেশি মুরগি পালন করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় যে কিছু বুঝতে না পারতেই অনেক মুরগি একসাথে মারা যায়। এর কারণ হলো দেশি মুরগির রোগ নির্ণয় এর সম্পর্কে কোন ধারণা লাভ না করা। দেশি মুরগির রোগ নির্ণয়ের জন্য প্রথমে মুরগির লক্ষণগুলো পর্যবেক্ষণ করতে হবে। মুরগির লক্ষণগুলোর উপর ভিত্তি করে রোগ নির্ণয় করা হয়।

দেশি মুরগির কিছু সাধারণ রোগের লক্ষণগুলো যেভাবে বুঝবেনঃ

সালমোনেলোসিস, কলেরা, কক্সিডিওসিসঃ মুরগি দুর্বল হয়ে পড়ে, পাতলা পায়খানা হয়, ঝিমিয়ে পড়ে, এবং মারা যেতে পারে।

গামবোরোঃ মুরগি হঠাৎ করে মারা যেতে পারে।

ফাউল পক্সঃ মুরগির শরীরে ফোস্কা দেখা দেয়।

কৃমিঃ মুরগি দুর্বল হয়ে পড়ে, খাওয়া-দাওয়া কমে যায়, এবং মারাও যেতে পারে।

অস্বাভাবিক আচরণঃ মুরগি যদি অস্বাভাবিক আচরণ করে, যেমন মাথা ঝুঁকিয়ে রাখা, চোখ বন্ধ করে রাখা, বা পায়ে দাঁড়াতে পারে না এটিও এক ধরনের রোগের লক্ষণ হতে পারে।

খাওয়া-দাওয়া কমে যাওয়াঃ মুরগি যদি খাওয়া-দাওয়া কমিয়ে দেয় এটাও একটি রোগের লক্ষণ।

ইন্টারস্টিসিয়াল নিউমোনিয়াঃ এটি একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ। এ রোগে মুরগির শ্বাসকষ্ট, কাশি, নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট, হাঁচি, ক্ষুধামন্দা, অবসাদ, ঝিমিয়ে পড়া, জ্বরের মতো লক্ষণ দেখা যায়।

উপরে যে সমস্ত রোগের লক্ষণ সম্পর্কে বলা হয়েছে আপনার দেশি মুরগির যদি এই সমস্ত লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে পারেন। এছাড়াও আমাদের এই পুরো আর্টিকেলে এই সমস্ত রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে বলা হয়েছে। আপনি যদি এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে নেন তাহলে এই সমস্ত রোগের ঔষধ সম্পর্কে ধারণা পেয়ে যাবেন। 

মুরগির ক্যালসিয়াম ঔষধের নাম

মুরগির ক্যালসিয়াম ওষুধের নাম অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কারণ মুরগি পালনে মুরগির ক্যালসিয়ামের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ ক্যালসিয়ামের অভাবে বিভিন্ন রোগ, মুরগির ওজন, ডিম না পড়া, হার নক অবস হওয়া, ডিমের খোসা পাতলা হওয়া, পালক পুড়ে যাওয়া এই সমস্ত সমস্যা দেখা দিতে পারে ক্যালসিয়ামের অভাবে।

তাই আপনাদের জন্য নিচে কয়েকটি ক্যালসিয়ামের খাবার এবং ক্যালসিয়ামের ঔষধ সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করব যা খাওয়ালে আপনার মুরগি সুস্থ থাকবে এবং ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ করবে। 

মুরগির জন্য ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার ও ঔষধের নাম নিম্নরূপঃ

খাবারঃ সরিষার বীজ, তিল, খেসারি ডাল, মটর ডাল, ছোলা, ঝিনুকের খোসা, ডিমের খোসা, মাছের হাড়, দুধ, দই, পনির ইত্যাদি ক্যালসিয়াম পূরণের জন্য খাওয়াতে পারেন। 

ঔষধঃ ক্যালসিয়াম কার্বনেট, ক্যালসিয়াম অক্সালেট, ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড, ক্যালসিয়াম ফসফেট, ক্যালসিয়াম লেসিথিন, ক্যালসিয়াম গ্লুকোনেট, ক্যালসিয়াম লিকোপোনেট, ক্যালসিয়াম সালফেট, ক্যালসিয়াম ক্যালভেট, ক্যালসিয়াম সার্টিফিকেট এই সকল ঔষধ ক্যালসিয়ামের জন্য অনেক উপকারী। 

আপনার মুরগি যদি ক্যালসিয়ামের অভাব থেকে থাকে তাহলে এই সমস্ত খাবার কিংবা ঔষধ গুলো খাওয়াতে পারেন যা আপনার মুরগির ক্যালসিয়াম বৃদ্ধি করতে অন্যরকম ভূমিকা পালন করবে।

দেশি মুরগির ভ্যাকসিন কোথায় পাওয়া যায়

দেশি মুরগির ভ্যাকসিন কোথায় পাওয়া যায় আমরা অনেকেই জানিনা তাই আমি আজকে আপনাদের জানাবো যে দেশি মুরগির ভ্যাকসিন কোথায় পাওয়া যায়। দেশি মুরগির ভ্যাকসিন বাংলাদেশের বিভিন্ন পশুচিকিৎসা ঔষধের দোকানে পাওয়া যায়। এছাড়াও, কিছু সরকারি এবং বেসরকারি পশুচিকিৎসা প্রতিষ্ঠানেও দেশি মুরগির ভ্যাকসিন পাওয়া যায়। এছাড়াও উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস পশু হসপিটাল থেকেও বিভিন্ন ধরনের ভ্যাকসিন সংগ্রহ করতে পারেন। 

দেশি মুরগির বাচ্চার ভ্যাকসিন

দেশি মুরগির বাচ্চার ভ্যাকসিন হিসাবে বাজারে বিভিন্ন রকম ভ্যাকসিন দেখা যায় এর ভিতরে যে সমস্ত ভ্যাকসিন কার্যকরী সে সমস্ত ভ্যাকসিন সম্পর্কে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব।

দেশি মুরগির বাচ্চার জন্য যেসব ভ্যাকসিন সাধারণত ব্যবহৃত হয় সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলোঃ

রানীক্ষেত ভ্যাকসিন, ব্রুডার নিউমোনিয়া ভ্যাকসিন, সালমোনেলোসিস ভ্যাকসিন, কক্সিডিওসিস ভ্যাকসিন, ইন্টারস্টিসিয়াল নিউমোনিয়া, কক্সিডিওসিস, কলেরা ভ্যাকসিন, গাম্বোরো ভ্যাকসিন সাধারণত দেশি মুরগির বাচ্চার ভ্যাকসিন হিসেবে এই সমস্ত ভ্যাকসিন বেশি ব্যবহার করা হয়। 
এগুলো ছাড়াও আরো অনেক ধরনের ভ্যাকসিন বাজারে পাওয়া যায় আপনি চাইলে সেগুলোও ব্যবহার করতে পারেন কিন্তু ব্যবহারের আগে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে করে নিবেন। কারণ বাজারে অনেক ভেজাল যুক্ত ভ্যাকসিন পাওয়া যায়।

দেশি মুরগির বাচ্চার ভ্যাকসিনের সময়সূচী সম্পর্কে জেনে নিন:
  • রানীক্ষেত ভ্যাকসিনঃ ৪-৭ দিন বয়সে।
  • কলেরা ভ্যাকসিনঃ ৪-৭ দিন বয়সে।
  • গাম্বোরো ভ্যাকসিনঃ ১০-১৪ দিন বয়সে।
  • কক্সিডিওসিস ভ্যাকসিনঃ ২১ দিন বয়সে।
এই সময়সূচীটি শুধুমাত্র একটি নির্দেশিকা হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। মুরগির স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের উপর ভিত্তি করে ভ্যাকসিনের সময়সূচী পরিবর্তন করা যেতে পারে।

মুরগির ভ্যাকসিনের দাম

মুরগির ভ্যাকসিনের দাম বিভিন্ন কারণের উপর নির্ভর করে, যেমনঃ ভ্যাকসিনের ধরন, ভ্যাকসিনের পরিমাণ, ভ্যাকসিন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এই সকল বিষয়ের উপর দাম নির্ধারণ হয়ে থাকে। এর পরেও যেগুলো কমন ভ্যাকসিন রয়েছে সেরকম কমন চারটি ভ্যাকসিনের দাম সম্পর্কে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব।

সাধারণত, দেশি মুরগির জন্য ব্যবহৃত ভ্যাকসিনের দাম হলোঃ
  • রানীক্ষেত ভ্যাকসিনঃ ১০০-১৫০ টাকা প্রতি ডোজ। 
  • কলেরা ভ্যাকসিনঃ ১০০-১৫০ টাকা প্রতি ডোজ।
  • গাম্বোরো ভ্যাকসিনঃ ১৫০-২০০ টাকা প্রতি ডোজ।
  • কক্সিডিওসিস ভ্যাকসিনঃ ১০০-১৫০ টাকা প্রতি ডোজ।
এই সমস্ত ভ্যাকসিনের দাম যে কোন সময় ওঠানামা করতে পারে আপনি যদি ভ্যাকসিনের সঠিক দাম জানতে চান তাহলে আপনার নিকটস্থ পশু চিকিৎসকের দোকানে গিয়ে ভ্যাকসিনের দাম যাচাই-বাছাই করতে পারেন। 

দেশি মুরগির ঔষধের তালিকাঃ শেষ কথা

আমাদের বাংলাদেশে বসত বাড়িতে অনেক আগে থেকেই দেশি মুরগি পালন করে আসছে। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে বসত বাড়ীর পাশাপাশি অনেকগুলো খামারও তৈরি হয়ে গিয়েছে। কারণ দেশি মুরগি পালন করে বাংলাদেশের অনেকেই স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। বর্তমানে দেশি মুরগি লাভজনক ব্যবসা হিসেবে অনেকেই ধরে নিয়েছেন। আবার দেখা যায় যে, অনেকেই চাকরি ছেড়ে দেশি মুরগির খামার করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছে।

এর কারণ হলো অন্যান্য মুরগির থেকে দেশি মুরগির রোগ বালাই কম হয়। আপনি যদি সঠিক নিয়মে দেশি মুরগি পালন করতে পারেন তাহলে আপনিও আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারবেন। কিন্তু এর জন্য দেশি মুরগির ঔষধের তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান থাকতে হবে। তাহলে দেখবেন অল্প সময়ের ভিতর দেশি মুরগি পালন করে লাভবান হয়েছেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মারিয়া অনলাইন ব্লকের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url