কবুতরের বাচ্চা খাওয়ার উপকারিতা
হাঁসের মাংসের উপকারিতা ও অপকারিতা জানতে ক্লিক করুনকবুতরের বিভিন্ন উপকারিতা ও ক্ষতির দিক এবং রান্নার রেসিপি কবুতরের দাম সহ কবুতরের বাচ্চা খাওয়ার উপকারিতা বলা হয়েছে। তাই আপনি যদি কবুতরের বাচ্চা খাওয়ার উপকারিতা না জেনে থাকেন তাহলে এই পুরো পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়া শুরু করতে পারেন। কারণ কবুতরের বাচ্চা খাওয়ার উপকারিতা সহ আরো বেশ কিছু টপিকের উপরে এই পুরো পোস্টটি সাজানো।
সূচিপত্রঃ কবুতরের বাচ্চা খাওয়ার উপকারিতা
তাই বেশি সময় নষ্ট না করে পুরো পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়া শুরু করুন এবং বিভিন্ন তথ্য জেনে ফেলুন।
কবুতরের বাচ্চা খাওয়ার উপকারিতা
আমরা অনেকেই জানি কবুতরের বাচ্চা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। কবুতরের বাচ্চা খাওয়ার সকল উপকারিতা নিয়ে আজকের পোস্টটি সাজানো হয়েছে তাহলে চলুন দেখি কি কি রয়েছে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কবুতরের মাংসে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ও প্রোটিন যা আমাদের শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে এবং রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
- স্মৃতিশক্তি ও স্কিনের উন্নতি কবুতরের মাংস রয়েছে অধিক পুষ্টি উপাদান যা আমাদের মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং স্ক্রিন ও ত্বকের ক্ষেত্রে অন্যরকম ভূমিকা পালন করে।
- পুষ্টি পরিপূরক বৈজ্ঞানিক মতে কবুতরের মাংস ভালো খাবারের পাশাপাশি ঔষধ ও বলা হয়। আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান পাওয়া যায় কবুতরের বাচ্চা মাংসের ভিতরে। কবুতরের বাচ্চা মাংসের চর্বির পরিমাণ নেই বললেই চলে। কবুতরের মাংস রক্তের শর্করা ও লিপিড বাড়ায় না।
- লিভার কিডনি ও রক্তের উন্নয়ন চিকিৎসকের মতে কবুতরের মাংসের লিভার ও কিডনি শক্তিশালী করে তোলে। আবার শরীরে রক্ত উৎপাদন করতে সাহায্য করে। যা আপনাকে দীর্ঘদিনের জন্য শারীরিক দুর্বলতা থেকে মুক্তি দিবে।
- বৈজ্ঞানিক মতে একটি কবুতর বাচ্চার যে পরিমাণ পুষ্টিগুণ রয়েছে যা অন্যান্য ২৬ টি মুরগির সমান। আবার গবেষণায় দেখা যায় যে অন্যান্য মাংসের তুলনায় কবুতর মাংসের ২ থেকে ২৪ শতাংশ পুষ্টি গুন বেশি পাওয়া যায়।
- এছাড়াও কবুতরের মাংস রয়েছে ভিটামিন এ, বি, ই, ও, ভিটামিন ডি, আয়রন, পটাশিয়াম, সিনিয়াম ও কপার রয়েছে যা আমাদের দেহের জন্য খুবই উপকারী।
- ডায়াবেটিস রোগীর জন্য কবুতরের বাচ্চা খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে।
- মধ্য বয়সি হাইপার, ডিপিডিমিয়া ইত্যাদি রোগের জন্য কবুতরের মাংস খাওয়া অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়।
- চুল পড়া বন্ধসহ হজম শক্তিশালী করতে কবুতরের মাংস অনেক বেশি উপকার করে থাকে।
এছাড়াও আরো অনেক উপকারিতা পাওয়া যায় যা বলে শেষ করার মত নয়। ইতিমধ্য আপনারা জেনেছেন কবুতরের বাচ্চা খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে।
কবুতরের মাংসের ক্ষতিকর দিক
কবুতরের মাংসের বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা রয়েছে আবার কয়েকটি ক্ষতিকর দিক ও রয়েছে যা আমাদের সবারি জানা রাখা প্রয়োজন। কবুতরের মাংস অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে আমরা অনেকেই জানি কবুতরের মাংসে চর্বি থাকে না কিন্তু এর চামড়াতে চর্বি দেখা যায়।
সেজন্য অতিরিক্ত খেলে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি হবে। আবার গবেষণায় দেখা গেছে কবুতর ৬০ টিরও বেশি জাতের রোগ বহন করে যা মানব দেহে মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করতে পারে তাই আমরা সবাই অতিরিক্ত কবুতরের মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকবো।
গর্ভাবস্থায় কবুতরের মাংস খাওয়ার উপকারিতা
অনেক মায়েরা বলে থাকেন যে গর্ভাবস্থায় কবুতরের মাংস খাওয়ার কি কি উপকারিতা রয়েছে গর্ভাবস্থায় কবুতরের মাংস খেলে অনেক ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায়। যেমনঃ পেটের বাচ্চা কে মোটাতাজা করা, গর্ভবতী মায়ের শারীরিক দুর্বলতা দূর করা, বাচ্চার স্মৃতিশক্তি বাড়ানো, বাচ্চার মেধা বাড়ানো,
গর্ভবতী মায়ের রক্তচাপ হাঁস করে ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। পেটের সন্তান বা গর্ভবতী মায়ের শরীর ভাঙ্গা রাখতে নিয়মিত পরিমান মত কবুতরের মাংস খেতে পারেন। কারণ কবুতরে যে পরিমাণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা ২৬ টি মুরগির ভিতরে নেই। এখন বলব প্রতি ১০০ গ্রাম কবুতরের মাংসের পুষ্টি নিয়ে যা শুনলে আপনি আজকে থেকেই খাওয়া শুরু করবেন।
যেমনঃ মোট ফ্যাট ২০জি, প্রোটিন ১৭ গ্রাম, কোলেস্টরেল ৮২ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ৪৬ এমজি, স্যাচুরেটেড ফ্যাট ৭জি, ক্যালসিয়াম ১%, লোহা ১৮%, ম্যাগনেসিয়াম ৪%, পটাশিয়াম ৪%, দস্তা ১৮%, ভিটামিন এ ৭%, ভিটামিন সি ৫%, হাইবেন ১৫%, নিয়াসিন 32%, রিবোফ্লাভিন১ ১৬%, ভিটামিন বি৬ ২১%,
ফলিক এসিড 1%, ভিটামিন বি১২ ১৫% ইত্যাদি। গর্ভস্থায় এই সমস্ত পুষ্টিগুন পেতে নিয়মিত কবুতরের মাংস খেতে পারেন। এতে আপনার পেটের বাচ্চা ও আপনি সুস্থ থাকবেন অনেকে মনে করে যে দুধ ডিম খেলেই পেটের বাচ্চা ও মা সুস্থ থাকে কিন্তু শুধু দুধ ডিম দিয়ে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে না এর সাথে কবুতরের মাংস যোগ করতে পারেন তাহলে এই সমস্ত পুষ্টিগুণ পেয়ে যাবেন।
কবুতরের মাংস রান্নার রেসিপি
আমরা অনেকেই কবুতরের মাংস খেতে অনেক ভালোবাসি কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা কিভাবে কবুতরের মাংস রান্না করলে সাধ অনেকটা বেড়ে যাবে। তাই এখন আপনাদের জানাবো কবুতরের মাংস রান্নার রেসিপি সম্পর্কে। সেজন্য প্রথমে দুটি কবুতর জবাই করে সুন্দর করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
এরপর দুই টেবিল পরিমাণ রান্নার তেল দিতে হবে তারপর পরিমাণ মতো পেঁয়াজ দিয়ে একটু রান্না করে সিদ্ধ করে নিতে হবে। এরপর এক টেবিল পরিমাণ আদা বাটা দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর এক টেবিল পরিমাণ রসুন বাটা এগুলো দিয়ে একটু ভালো মিশিয়ে নিয়ে নিতে হবে
এরপর চিরা বাটা এক টেবিল পরিমাণ দেওয়ার পর কিছুক্ষন গরম করে নিতে হবে। এরপর দিতে হবে চারটা সাদা গোটা চারপাশটা দারচিলি এক চা চামচ গুড়া মরিচ এবং হাফ চা চামচ হলুদের গুড়া এরপর পরিমাণ মতো লবণ এবং হাফ চা চামচ পানি দিয়ে একটু লাল করতে হবে লো হিটে।
এবং তেজপাতা দিতে হবে এরপর পাঁচ মিনিটের মতো মসলাগুলো ঢেকে দিয়ে জাল করে নিতে হবে এরপর কষানো হয়ে গেলে মাংসগুলো ঢেলে নিতে হবে। এরপর পাঁচ মিনিট পর পর ঢাকনা খুলে নেড়ে নিতে হবে কারণ মাংসের ভিতরে কোন প্রকার পানি নেই তাই পাঁচ মিনিট পর পর চামচ দিয়ে এপাশ করে নিতে হবে।
একটা কথা মনে রাখবেন মসলাগুলো যতো ভালো করে কষাতে পারবেন আপনার রান্নাটা তো সুস্বাদু হবে। তাই কষানোর সময় একটু ভালো করে কষিয়ে নিবেন এরপর কসানো হয়ে গেলে এক কাপ পরিমাণ গরম পানি বা ঠান্ডা পানি দিতে হবে। এরপর ৭-৮ মিনিট ঢাকনা দিয়ে রান্না করে নিতে হবে এভাবে পাঁচ সাত মিনিট করে রান্না করে আবার ঢেকে দিতে হবে।
যদি কবুতরের মাংস ভুনা করতে চান তাহলে রান্না করার সময় ঝোল একটু কমিয়ে ফেলবেন। আর যদি ভুনা করতে না চান তাহলে হালকা ঝোলসহ নামিয়ে নিতে পারেন আশা করছি এই নিয়ম ফলো করে যদি কবুতরের মাংস রান্না করেন তাহলে সে রেসিপিটা অনেক সুন্দর ও সুস্বাদু হবে যা একবার খেলে আবার খেতে মন চাইবে।
কবুতরের মাংসের দাম
কবুতরের মাংসের দাম অনেকেই অজানা রয়েছে সেজন্য এখন আপনাদের জানাবো কবুতরের মাংসের দাম নিয়ে। সাধারণত কবুতরের মাংসের দাম একটু কম হয়ে থাকে কিন্তু এটি স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী পাখি বলে চিকিৎসকেরা বলে। আমরা বিভিন্ন বাড়িতে কিংবা বাজারে দেখি কবুতর সাধারণত ১৫০ থেকে ২০০ টাকার ভিতর বিক্রি করে থাকে।
আবার অনেক সময় এর থেকে কম বা বেশি হয়ে থাকে কবুতরের মাংসের দাম এক এক অঞ্চলে এক এক রকমে বিক্রি হয়ে থাকে। তাই আপনি কোন এলাকায় আছেন তার উপর নির্ভর করছে কবুতরের দাম আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।
শেষ কথা
কবুতরের বাচ্চা খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে নতুন করে বলার কিছুই নেই কারণ আমরা এই পুরো পোস্ট থেকে জানতে পেরেছি। আর যদি আপনি পুরো পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে না পড়ে থাকেন তাহলে এই সমস্ত বিষয় সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা লাভ করতে পারবেন না এবং বুঝতে পারবেন না। আমরা এই পোস্টে কবুতরের বাচ্চা খাওয়ার উপকারিতা সহ বেশ কিছু ট্রাফিক নিয়ে পূর্ণ ধারণা দিয়ে পুরো আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে।
এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার কেমন লেগেছে কমেন্টে মন্তব্য করতে পারেন। আজকের এই আর্টিকেলটি চিকিৎসকের আলোকে লেখা হয়েছে তাই আপনার কাছে যদি পোস্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন ধন্যবাদ।
মারিয়া অনলাইন ব্লকের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url